‘সেন্টমার্টিন রিসোর্ট’ বন্ধ রাখার নির্দেশ হাইকোর্টের
পরিবেশ ছাড়পত্র না পাওয়া পর্যন্ত দেশের প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনে অবকাশ পর্যটন লিমিটেডের মালিকানাধীন ‘সেন্টমার্টিন রিসোর্ট’ বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিয়ে রায় ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। একইসাথে আদালত পরিবেশগত ছাড়পত্রবিহীন সেন্টমার্টিন রিসোর্ট প্রতিষ্ঠানটির সকল কার্যক্রম অবিলম্বে বন্ধ করতে পরিবেশ অধিদপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছেন।
এ সংক্রান্ত বিষয়ে জারি করা রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে আজ বুধবার হাইকোর্টের বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রায় দেন। আদালতে আজ পরিবেশবাদী সংগঠন বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতির (বেলা) পক্ষে শুনানি করেন সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা হিসেবে ঘোষিত বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিনকে রক্ষার স্বার্থে অবৈধভাবে নির্মিত সকল হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট ও অন্যান্য বাণিজ্যিক স্থাপনা অপসারণ এবং প্রবাল, কাঁকড়া, শামুক, ঝিনুক, কচ্ছপ অন্যান্য জলজ প্রাণীর অনিয়ন্ত্রিত আহরণ বন্ধে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) ২০০৯ সালে একটি জনস্বার্থমূলক মামলা দায়ের করেন।
মামলার চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১১ সালের ২৪ অক্টোবর আদালত সেন্ট মার্টিন দ্বীপে পরিবেশগত ছাড়পত্র ছাড়া গড়ে ওঠা সকল স্থাপনা ভেঙে ফেলতে এবং ভবিষ্যতে যেন পরিবেশগত ছাড়পত্র ছাড়া কোনো স্থাপনা গড়ে উঠতে না পারে, সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে; কাঁকড়া, শামুক, ঝিনুক, কচ্ছপসহ অন্যান্য জলজ প্রাণী সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়ে রায় প্রদান করেন। সেইসাথে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ অনুযায়ী শাস্তি প্রদানেরও নির্দেশ প্রদান করেন উচ্চ আদালত।
২০১১ সালের রায় ও নির্দেশ প্রতিপালনের লক্ষ্যে পরিবেশ অধিদপ্তর সেন্ট মার্টিন দ্বীপে পরিবেশগত ছাড়পত্র ছাড়া গড়ে ওঠা অন্যান্য স্থাপনাগুলোর সঙ্গে অবকাশ পর্যটন লিমিটেড-এর সেন্ট মার্টিন রিসোর্ট উচ্ছেদের নোটিশ প্রদান করেন। পরবর্তীতে অবকাশ পর্যটন লিমিটেড-এর সেন্ট মার্টিন রিসোর্ট-এর অনুকূলে পরিবেশগত ছাড়পত্র প্রদানের জন্য অনলাইনে পরিবেশ অধিদপ্তর বরাবর আবেদন করলে পর্যাপ্ত তথ্যের অভাবে আবেদনটি বাতিল করে পরিবেশ অধিদপ্তর। পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক প্রেরিত এ নোটিশ ও পরিবেশগত ছাড়পত্র প্রাপ্তির আবেদন বাতিলের বৈধতা চ্যালেঞ্চ করে অবকাশ পর্যটন লিমিটেড ২০১৭ সালে উচ্চ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার প্রাথমিক শুনানি শেষে আদালত পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক সেন্ট মার্টিন রিসোর্ট ভেঙে ফেলা সংক্রান্ত নোটিশ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং এ প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে পরিবেশগত ছাড়পত্র প্রদানের নির্দেশ কেন প্রদান করা হবে না, তা জানতে চেয়ে বিবাদীগণের ওপর দুটি রুল জারি করেন। পরবর্তীতে বেলা এ মামলায় পক্ষভুক্ত হয়ে মামলাটিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে।