হরতাল কারফিউ কিছুই মানা হবে না : মির্জা ফখরুল
‘হরতাল কারফিউ কিছুই মানা হবে না; সকল বাধা উপেক্ষা করে নেতাকর্মীরা খুলনায় জনসমাবেশে উপস্থিত হবেন’ বলে জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ বুধবার সন্ধ্যায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয় বাংলাদেশ জাতীয়বাদী দল ও বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির সাথে পৃথক সংলাপ শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
খুলনায় বিএনপির জনসমাবেশকে কেন্দ্র করে গণপরিবহণ বন্ধ করে দেওয়ার সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ময়মনসিংহ একইভাবে গণপরিবহণ বন্ধ করে দিয়েছিল, কিন্তু সমাবেশ ঠেকাতে পারেনি। মানুষ ট্রলারে করে, রিকশায় করে, হেঁটে সমাবেশে জড়ো হয়েছে। তারা গাড়ি বন্ধ করুক আর যাই করুক, গণতন্ত্র উদ্ধার আন্দোলনে নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করবে ইনশাআল্লাহ।
বিএনপির সভা সমাবেশে বাধা দেওয়া হবে না প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, আজ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কোনো কথা কি তারা রাখতে পেরেছে? পারেনি। কারণ তারা বিশ্বাস করে যা বলব, তা পারব না, উল্টোটা করে। সুতরাং আওয়ামী লীগকে বিশ্বাস করার কোনো কারণ নেই।
‘বিএনপি আরেকটি ১/১১’র দুঃস্বপ্ন দেখছে’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে ফখরুল বলেন, ‘বিএনপি দিবাস্বপ্ন দেখে না। বিএনপি স্বপ্ন দেখে একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের। আমরা স্বপ্ন দেখি মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার, আমরা স্বপ্ন দেখি সত্যিকার অর্থে একটি বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করার।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এই অনির্বাচিত, অবৈধ, ভোটের অধিকার হরণকারী, লুটেরা আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে তাদের পদত্যাগের দাবিতে আমরা একটি ঐকমত্য সৃষ্টি করে আন্দোলনে যাওয়ার উদ্দেশ্যে রাজনৈতিক দলের সাথে কথা বলছি। প্রথম দফা শেষ করে দ্বিতীয় দফায় ইতোমধ্যে ১৪টি দলের সাথে আলোচনা শেষ করেছি। এর অংশ হিসেবে আজকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল ও বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির সঙ্গে কথা বলেছি।’
তিনি বলেন, তাদের সাথে আলোচনায় আমরা যে দাবিগুলো উত্থাপন করেছি এর মধ্যে প্রথম যে দাবিগুলো রয়েছে- এই সংসদকে ভেঙে দিতে হবে, সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। এরপর নির্বাচনকালীন সময়ে একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করতে হবে। সেই সরকার নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করবে। সেই কমিশনের মাধ্যমে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান করে একটি জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা হবে। এই লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি।
বিএনপির শীর্ষ নেতা বলেন, দাবিগুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ যেটা রয়েছে তা হলো আমাদের গণতন্ত্রের মা বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে। আমরা মনে করি বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে সবচেয়ে বেশি ত্যাগীনেতা বেগম খালেদা জিয়া। যাকে অন্যায়ভাবে সাজা দিয়ে গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছে, তাকে মুক্তি দিতে হবে। একই সাথে বিরোধী দলীয় নেতাদের নামে যে মিথ্যে মামলা রয়েছে, তা প্রত্যাহার করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা বলেছি যে হারে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে, জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে, প্রত্যেকটি জিনিসের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে; এ সকল জিনিসের মূল্য সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে। গত পনের বছর ধরে যে ভয়াবহ রকমের দুর্নীতি হয়েছে, সেই দুর্নীতিকে যারা ঘটাচ্ছে তাদেরকে চিহ্নিত করার জন্য একটি কমিশন গঠন করা হবে। একই সাথে বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে আমরা আন্দোলন করছি।’
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, আমরা একমত হয়েছি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল ও বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টি যুগপৎ আন্দোলন করবো।