হরতাল প্রতিহতে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ মোদির বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতা, কয়েকজনকে গুলি করে হত্যা ও সংঘর্ষের ঘটনায় আজ রোববার হরতাল পালন করেছে হেফাজতে ইসলাম। হরতালের বিরুদ্ধে ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।
ঠিক বেলা ১১টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড এলাকায় দেখা যায়, হরতালের সমর্থক, পুলিশ ও ছাত্রলীগের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ চলছে। একবার পুলিশ ও সরকার সমর্থকরা পিছু হঁটে, একবার হরতাল পালনকারীরা।
এর মধ্যে থেমে থেমে পুলিশ রাবার বুলেট ছুড়তে থাকে। এ ছাড়া ছাত্রলীগ ও হরতাল সমর্থকেরা পাল্টাপাল্টি ইটপাটকেল ছুড়ছিল। কখনও ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটছিল।
এরপর দুপুর ১টার দিকে দেখা যায়, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের শত শত নেতাকর্মী ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে হরতালের বিরোধিতা করছে।
দুপুর দেড়টার দিকে হঠাৎ দেখা যায়, সাইনবোর্ড এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের শত শত যুবক লাঠিসোঁটা হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। সেখানে কোনো পুলিশ সদস্যকে দেখা যায়নি। তাদের মধ্যে দুই-একজনকে পাঞ্জাবী পরে থাকতে দেখা যায়। সে সময় দুজন সাংবাদিক সেখানে গিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তারা সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালান।
সেখান থেকে ফিরে কয়েকজন হরতাল সমর্থকের সঙ্গে কথা হলে তারা অভিযোগ করে বলেন, ওরা হেফাজত নয়, ছাত্রলীগ। আন্দোলন বানচাল করতে অবস্থান নিয়েছে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ওয়ারী বিভাগের ডেমরা জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) দ্বীন মোহাম্মদ। তিনি এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি। ফলে টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছুড়তে হচ্ছে। তারপরও হরতালকারীরা বিভিন্নভাবে আক্রমণ করার চেষ্টা করছে।’
সাইনবোর্ড এলাকা থেকে ফিরতে ফিরতে যাত্রাবাড়ী বাস স্ট্যান্ডে গিয়ে দেখা যায়, সেখানেও পুলিশের সতর্ক অবস্থান। সে সময় যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মোটরসাইকেলে শো-ডাউন করতে দেখা যায়। শো-ডাউন দিয়ে যাওয়ার সময় এক কর্মীকে বলতে শোনা যায়, ‘শেখ হাসিনার ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই।’
এরপর বাইতুল মোকাররম মসজিদ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের হরতাল সমর্থনে বিক্ষোভ মিছিল করছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। বাদ জোহর বায়তুল মোকাররম মসজিদ থেকে মিছিল নিয়ে বের হয়ে পুরানা পল্টন মোড়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করে দলটি। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীমের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী অংশ নেন।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ যখন বিক্ষোভ করছিল তখন আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের অনেকেই পাশাপাশি অবস্থান করছিলেন। একপর্যায়ে দুইপক্ষের মধ্যে মিনিট পাঁচেকের জন্য ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এরপর পুলিশের অনুরোধে তারা বিক্ষোভ মিছিল শেষ করে বাইতুল মোকাররমে গিয়ে অবস্থান নেন।
সে সময় সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেন, ‘আমাদের আজকের এই কর্মসূচি রাজনৈতিক নয়। আমাদের কয়েকজন মুসল্লিকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। আমরা তার প্রতিবাদ জানাচ্ছি। বাদ জোহর বাইতুল মোকাররমের উত্তর গেট থেকে একটি মিছিল বের হয়। পল্টন মোড়ে এসে মিছিলটি শেষ হয়। এখন আমরা বাইতুল মোকাররমের ভেতরে অবস্থান নেব।’