হাজী সেলিমকে জামিন দেয়নি আপিল বিভাগ
জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় ১০ বছরের কারাদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে হাজী সেলিমের করা লিভ টু আপিল আগামী ২৩ অক্টোবর শুনানির জন্য দিন নির্ধারণ করে তার জামিন আবেদনটি নথিভুক্ত করেছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত।
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির আপিল বিভাগ আজ সোমবার এই আদেশ দেন।
আদালতে হাজী সেলিমের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা। আর দুদকের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।
এর আগে বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ বিচারিক আদালতের দেয়া হাজী সেলিমের ১০ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা জরিমানার রায় বহাল রাখেন। পরে পূর্ণাঙ্গ সে রায় প্রকাশিত হয়।
আদালত তার রায়ে জরিমানার টাকা অনাদায়ে হাজী মো. সেলিমকে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন এবং রায় পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে তাকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়। আর আত্মসমর্পণ না করলে জামিন বাতিল করে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করতে রায়ে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।
এছাড়া এই মামলায় হাজী সেলিমের জব্দকৃত সম্পত্তি রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করতে বলা হয় রায়ে। তবে সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে এ মামলায় বিচারিক আদালতের তিন বছরের কারাদণ্ড থেকে হাজী সেলিমকে খালাস দেন হাইকোর্ট।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা এই মামলায় বিচারিক আদালত তাকে ১৩ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছিল। পরে হাইকোর্ট সে সাজা থেকে তাকে খালাস দেন। কিন্তু সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশে হাইকোর্টে এই মামলাটি আবার শুনানি হয়।
জরুরি অবস্থার সময় ২০০৭ সালের ২৪ অক্টোবর হাজী সেলিমের বিরুদ্ধে লালবাগ থানায় অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে মামলা করে দুদক। ২০০৮ সালের ২৭ এপ্রিল বিচারিক আদালতের রায়ে তাকে ১৩ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
পরে ২০০৯ সালের ২৫ অক্টোবর হাজী সেলিম এই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন। ২০১১ সালের ২ জানুয়ারি হাইকোর্ট ১৩ বছরের সাজা বাতিল করে রায় দেয়। হাইকোর্টের কোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করে দুদক। সে আপিলের শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১২ জানুয়ারি হাইকোর্টের রায় বাতিল হয়ে যায়। সেই সঙ্গে হাজী সেলিমের আপিল পুনরায় হাইকোর্টে শুনানির নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। শুনানি শেষে হাইকোর্ট হাজী সেলিমকে বিচারিক আদালতের দেয়া ১০ বছরের কারাদণ্ড এবং ১০ লাখ টাকা জরিমানা বহালের রায় দেন। এই রায়ের পর আত্মসমর্পণ করলে হাজী সেলিমকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭-এর বিচারক শহিদুল ইসলাম। আত্মসমর্পণের পাশাপাশি জামিনের আবেদনসহ দুটি আবেদন করেন হাজী সেলিম। আদালত জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাবিধি অনুযায়ী হাজী সেলিমকে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দেন। সে অনুযায়ী হাজী সেলিমকে চিকিৎসার জন্য বিএসএমএমইউ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এখন সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন।