১১ বছরের মেয়েকে হারিয়ে পাগলপ্রায় শিমু
‘আমার মাইয়্যাডা ছোড (ছোট), ১১ বছর বয়স। মাদ্রাসায় পড়ত। করোনায় মাদ্রাসা বন্ধ দেইখা (দেখে) চুরি কইরা কাজে আইছে। আমি না করছি।’
আজ শুক্রবার নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার ভুলতা কর্ণগোপ এলাকায় হাশেম ফুডস অ্যান্ড বেভারেজ গ্রুপের কারখানার সামনে মেয়েকে খুঁজতে এসে এভাবেই বিলাপ করছিলেন শিমু মণি। তাঁর মেয়ের নাম শান্তা মণি।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে এই কারখানায় অগ্নিকাণ্ড ঘটে। আগুন লাগার পর পরই গোটা ভবনে লেলিহান শিখা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। আজ শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত ৫২ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে তিনজন এবং আজ শুক্রবার দুপুরের পর আরও ৪৯ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এসব লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
কারখানার কর্মী শান্তা মণির মা শিমু মণি বলেন, ‘আমরা মাইয়া (মেয়ে) কাজে ঢুকছে আইজ্যা (আজ) দিয়া তিন দিন হইছে। আমার মাইয়্যার (মেয়ের) চাকরি করা লাগে না ভাই। আমার মাইয়ারে (মেয়ে) চাকরি আমি দিছি না, চুরি কইর্যা (করে) ঢুকছে। আমার মাইয়্যাডা (মেয়ে) ছোড (ছোট), ১১ বছর বয়স। মাদ্রাসায় পড়ত। করোনায় মাদ্রাসা বন্ধ দেইখা না করছি, আমার স্বামী মরছে আট বছর হইছে। আমার সন্তানকে কোনো দিন কষ্ট দিছি না। আমার নাম শিমু। আমার মাইয়্যার নাম শান্তা মণি। আমার ছেলে ও মেয়ে এখানে চাকরি করে।’
এ ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ও প্রাণহানীর ঘটনা তদন্তে সাত সদস্যের কমিটি গঠন করেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন। এ কমিটিকে আগামী সাতদিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।