৫ বছর পর স্বাচিপ সম্মেলনে নতুন নেতৃত্বের আশা
আওয়ামী লীগের অন্যতম সহযোগী সংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সম্মেলনকে ঘিরে নতুন নেতৃত্বের আশা করছে নেতাকর্মীরা। আগামী ২৫ নভেম্বর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
আওয়ামীপন্থী চিকিৎসকদের নিয়ে সংগঠনটির ৫ বছর পর পর সম্মেলন হওয়ার কথা থাকলেও সবশেষ সম্মেলন ২০১৫ সালের শেষদিকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনে অধ্যাপক ডা. এম ইকবাল আর্সলান সভাপতি ও অধ্যাপক ডা. এম এ আজিজ মহাসচিব হিসেবে নির্বাচিত হন।
করোনার রেশ কাটিয়ে ৭ বছর পর সম্মেলনকে ঘিরে চিকিৎসকদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে। স্বাচিপের শীর্ষ পদে স্থান পেতে চিকিৎসকদের অনেকেই প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ ও দলীয় মন্ত্রীদের সঙ্গে দেখা করছেন। আবার করোনার সময়ে নিজেদের কর্মকাণ্ড তুলে ধরে দলীয় প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আর্কষণ করাও চেষ্টা চালাচ্ছেন।
এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে কথা হয় স্বাচিপের সিনিয়র কয়েকজন নেতার সাথে। তারা বলেন, ২০২৪ সালের শুরুতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের আগে স্বাচিপের নেতৃত্বে পরীক্ষিত নেতাদের পদ দিতে হবে। এক যুগেরও বেশি সময় ধরে দল ক্ষমতায় থাকায় অনেক সুযোগসন্ধানী কথিত স্বাচিপ নেতা তৈরি হয়েছে। স্বাচিপের দুর্দিনে যাদের দেখা যায়নি, এখন তাদের অনেকেই বড় নেতা সাজছেন। এ কারণে এবারও দলীয় প্রধানের কাছ থেকেই স্বাচিপের শীর্ষ নেতা অর্থাৎ সভাপতি ও মহাসচিবসহ গুরুত্বপূর্ণ পদের ঘোষণা আসতে পারে।
প্রায় দুই দশকের বেশি সময় স্বাচিপের সভাপতি সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে থাকা ডা. এম ইকবাল আর্সলান এবারও সভাপতি পদে থাকতে বিভিন্নভাবে তবদির করে যাচ্ছেন। এছাড়া আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা ও বিএসএমএমইউ এর সাবেক উপাচার্য, নিউরোসার্জন অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া, ডা. জামাল উদ্দিন চৌধুরী, কোষাধ্যক্ষ অবসরপূর্ব ছুটিতে যাওয়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. ইউসুফ ফকিরও সভাপতি পদের জন্য তবদির করে যাচ্ছেন।
এছাড়া মহাসচিব পদে বর্তমান মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এম এ আজিজ ছাড়াও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়া, ডা. জুলফিকার আলী লেলিন, সদস্য ডা. তারিক মেহেদী পারভেজ, ডা. আবু রায়হান প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
সম্মেলনের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাইলে ডা. ইকবাল আর্সনাল বলেন, স্বাচিপের সম্মেলন আরও আগে হওয়ার কথা থাকলেও করোনার কারণে তা সম্ভব হয়নি। ২৫ নভেম্বর হতে যাচ্ছে। সারা দেশ থেকে কাউন্সিলররা আসবেন। সে অনুযায়ী প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে সারা দেশে স্বাচিপের ১৫ হাজারেরও বেশি সদস্য রয়েছে।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৩ সালের ২৪ ডিসেম্বর স্বাচিপ গঠিত হয়। স্বাচিপের প্রতিষ্ঠাকালে অধ্যাপক ডা. এম এ কাদেরী সভাপতি ও ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ২০০৩ সালের কেন্দ্রীয় সম্মেলনে অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হক সভাপতি ও অধ্যাপক এম ইকবাল আর্সলান মহাসচিব নির্বাচিত হন।
২০১৫ সালে ১৩ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে স্বাচিপের চতুর্থ জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। শেখ হাসিনা সম্মেলনে কমিটির ভার স্বাচিপের নেতাকর্মীদের ওপর ছেড়ে দেন। পরবর্তীতে ডা. এম ইকবাল আর্সলান সভাপতি ও ডা. এম এ আজিজ মহাসচিব নির্বাচিত হন।