‘অশালীন ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি’, স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যার চেষ্টা
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় এক স্কুলছাত্রীর অশালীন ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এর জের ধরে বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছে ওই স্কুল ছাত্রী।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি কোটালীপাড়ার পিঞ্জুরী গ্রামে ওই ঘটনা ঘটে। পরের দিন বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে ওই ছাত্রী।
স্কুলছাত্রী নিজেই জানায়, ঘটনার দিন রাতে সে বাড়ির বাইরে বাথরুমে যাচ্ছিল। সে সময় পিঞ্জুরী গ্রামের সম্রাট মণ্ডল, তার সহযোগী সজল বিশ্বাস ও মিঠু বসু তার মুখ চেপে ধরে বাথরুমে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে জোর করে বিবস্ত্র করে। পরে বাথরুমের বৈদ্যুতিক আলোতে মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করে । ছাত্রী আরো জানায়, একপর্যায়ে ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয় তারা। নিজের ও পরিবারের সম্মান নষ্টের ভয়ে পরের দিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায় সে।
অসুস্থ অবস্থায় ছাত্রীকে কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে তাকে গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আগামী বছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা ওই ছাত্রীর। এ ঘটনার পর থেকে সে এসএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি বন্ধ করে দিয়েছে।
এ বিষয়ে ওই ছাত্রীর মা জানান, সম্রাট তাঁর মেয়েকে উত্ত্যক্ত করত। তাঁকে প্রেমের প্রস্তাব দিলে সে প্রত্যাখ্যান করে। এর জের ধরেই তার সঙ্গে এসব করা হয়েছে। তিনি ওই তিনজনের শাস্তি দাবি করেন।
ওই স্কুলছাত্রীর বাবা জানান, ঘটনা ফাঁস করলে তাঁর মেয়েকে হত্যা করা হবে বলে হুমকি দিয়েছে বখাটেরা।
মেয়েটির শারীরিক অবস্থা আশঙ্কামুক্ত হলেও তার মানসিক অবস্থা এখনো ভালো হয়নি বলে জানিয়েছেন কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা প্রেমানন্দ মণ্ডল। তিনি জানান, ওই ছাত্রীকে বিষ খাওয়ার পর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তাকে সে অনুযায়ী চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তাঁকে গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে অবস্থা ভালো হলে আবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়।
এ বিষয়ে কোটালীপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ওই ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে গত শুক্রবার বিকেলে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছেন। তাদের গ্রেপ্তারের জন্য বিভিন্ন স্থানে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
আজ সোমবার সকালে আসামি সম্রাটকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদেরও গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানান ওসি।

মাহবুব হোসেন সারমাত, গোপালগঞ্জ