বাঘাইছড়ি পৌরসভা নির্বাচনে জিরো টলারেন্স : নির্বাচন কমিশনার
রাঙামাটির বাঘাইছড়ি পৌরসভা নির্বাচনে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অবলম্বনের ঘোষণা দিয়েছেন নতুন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাৎ হোসেন চৌধুরী।
আগামীকাল শনিবার অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ওই নির্বাচনের দায়িত্বরত সবাইকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে কাজ করার নির্দেশও দিয়েছেন কমিশনার।
আজ শুক্রবার বেলা ১১টায় বাঘাইছড়ি উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এক জরুরি সভায় এ নির্দেশনা দেন শাহাদাৎ হোসেন। তিনি সবাইকে ইসির ভাবমূর্তি রক্ষা করে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনেরও অনুরোধ করেন।
এ সময় রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মানজারুল মান্নান, নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং অফিসার নাজিমউদ্দিন, নয়টি কেন্দ্রের কেন্দ্রপ্রধানসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, শনিবার অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় পৌরসভা নির্বাচনের জন্য সব প্রস্তুতি শেষ করেছে পৌরসভাটি। আয়তনে দেশের সবচেয়ে বড় উপজেলার একমাত্র পৌরসভায় দ্বিতীয়বারের মতো অনুষ্ঠিত এ নির্বাচনে লড়ছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও স্বতন্ত্র এক প্রার্থী। এ পৌরসভায় ভোটার রয়েছেন প্রায় ১০ হাজার।
দুপুরের মধ্যেই পৌরসভার নয়টি কেন্দ্রে নির্বাচনী সরঞ্জাম পৌঁছে গেছে। সেখানে গেছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও নির্বাচন কর্মকর্তারাও। সব প্রস্তুতি এরই মধ্যে শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং অফিসার নাজিমউদ্দিন।
এরই মধ্যে নির্বাচনী প্রচারণার সময়সীমা শেষ হয়ে যাওয়ায় তিন প্রার্থী নৌকার জাফর আলী খান, ধানের শীষের ওমর আলী এবং স্বতন্ত্র আজিজুর রহমান আজ তাঁদের বাসাতেই ছিলেন।
সব কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ
বাঘাইছড়ি পৌরসভা নির্বাচনের নয়টি কেন্দ্রের সবকটিকেই ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. নাজিমউদ্দিনও বিষয়টি স্বীকার করে বলেছেন, ‘এখানকার বাস্তবতা একটু অন্য রকম। তাই সবকটি কেন্দ্রকেই আমরা গুরুত্বপূর্ণ, যেটাকে আপনারা ঝুঁকিপূর্ণ বলেন, সেই হিসেবেই বিবেচনা করছি।’
বিএনপি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের পক্ষ থেকেও নয়টি কেন্দ্রকেই ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে দাবি করা হয়েছে।
বহিরাগত প্রবেশের অভিযোগ
রাঙামাটি জেলা বিএনপির সভাপতি হাজি মো. শাহ আলম বলেন, ‘রাঙামাটি পৌরসভা নির্বাচনে যারা ভোট ডাকাতিতে নেতৃত্ব দিয়েছে তারা সবাই এখন বাঘাইছড়িতে অবস্থান করছে। এখানকার সব হোটেল রেস্ট-হাউস সরকারি দলের নেতাকর্মীদের দখলে এখন। আমরা আশঙ্কা করছি বাঘাইছড়িতেও রাঙামাটির ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে।’
শাহ আলম বলেন, ‘মঙ্গলবার বাঘাইছড়ি উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় আমরা নির্বাচনের আগেই বহিরাগতদের বের করে দেওয়া এবং প্রতিটি কেন্দ্রে বিজিবি নিয়োগের দাবি জানিয়েছি।’ তিনি বলেন, নতুন নির্বাচন কমিশনাররা দায়িত্ব নিয়েছেন। এই নির্বাচন তাঁদের অধীনে প্রথম নির্বাচন। সুতরাং তাঁরা প্রথম পরীক্ষায় পাস করলেই বোঝা যাবে, তাঁদের অধীনে নির্বাচন আদৌ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে কি না। তিনি বিভিন্ন এলাকায় ধানের শীষের কর্মীদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন।
চ্যালেঞ্জ নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন
রাঙামাটি জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা নাজিমউদ্দিন বলেন, বহিরাগতদের পৌর এলাকা ছাড়ার জন্য বুধবার থেকে মাইকিং শুরু হয়েছে। আশা করছি সবাই বেরিয়ে গিয়ে সহযোগিতা করবে। তিনি বলেন, ‘বিজিবি প্রতিটি ভোটকেন্দ্রের বাইরে টহল দেবে এবং আমরা বাড়তি নিরাপত্তা নিশ্চিত করছি।’
নাজিমউদ্দিন বলেন, ‘এটা অবশ্যই চ্যালেঞ্জ আমাদের জন্য, কারণ নতুন নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব নিয়েই এই নির্বাচন। আমরাও চেষ্টা করছি সততা ও নিরপেক্ষতার সঙ্গে নির্বাচন করতে। সবার সহযোগিতা পেলে নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে।’