১১ বছরে ২২৩ মৃত্যু, তবু ঝুঁকির পাহাড়ে মানুষ
চট্টগ্রামে ৩০টি ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে বসবাসকারীদের গত সোমবারের মধ্যে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল প্রশাসন। কিন্তু আজ বৃহস্পতিবারও তা কার্যকর হয়নি। এখনো বিভিন্ন এলাকায় সাড়ে ৬০০ পরিবার ঝুঁকির মধ্যে বাস করছে।
আট বছর আগে ২০০৭ সালের আজকের এই দিনে চট্টগ্রামে ভয়াবহ পাহাড়ধসে নিহত হয়েছিল ১২৭ জন। ২৪ ঘণ্টার প্রবল বর্ষণে পাহাড়ধস ও মাটিচাপায় বড় ঘটনাটি ঘটে নগরীর লালখান বাজার, সেনানিবাস এলাকার কাছিয়াঘোনাসহ কয়েকটি পাহাড়ে।
কেবল ২০০৭ সালে নয়, ২০০৩ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত টানা ১১ বছরে চট্টগ্রামে পাহাড়ধসে মারা গেছে ২২৩ জন। এর আগে ২০০০ সালে তিন শিশু পাহাড়ধসে মারা যায়।
গত বুধবার অবৈধভাবে পাহাড়ে বসবাসকারীদের উচ্ছেদে তিনজন নতুন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করেছেন জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন। দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের আগামী ১৮ জুনের মধ্যে নিজ নিজ এলাকার পাহাড়ের পাদদেশে অবৈধভাবে বসবাসকারীদের উচ্ছেদ করে জেলা প্রশাসকের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গত ২ জুন চট্টগ্রাম পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় নগরীর প্রায় ৩০টি ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে বসবাসকারীদের গত ৮ জুনের মধ্যে সরে যাওয়ার নির্দেশ থাকলেও তা কার্যকর হয়নি।
চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মো. আবদুল্লাহ জানান, নগরীর ৩০টি পাহাড়ে প্রায় সাড়ে ৬০০ পরিবার ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছে।
এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের সাবেক সভাপতি প্রকৌশলী মোহাম্মদ হারুন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘চট্টগ্রামের সব পাহাড়ই এখন ঝুঁকিপূর্ণ। আমরা এসব পাহাড়ে অবৈধ বস্তি থাকার সুযোগ করে দিয়েছি এবং তারা যেনতেনভাবে সেখানে বাস করছে। অপরিকল্পিত ব্যবহারের কারণে পাহাড়ের গতি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে এবং ধসের কারণে জলাবদ্ধতা বাড়ছে আর তৈরি হচ্ছে যানজট।’
প্রকৌশলী মোহাম্মদ হারুন আরো বলেন, ‘কেবল নগরের পাহাড় নয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ভবনও ঝুঁকিপূর্ণ। একই সঙ্গে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়কে ঘিরে যে পাহাড় আছে, সেগুলোও ঝুঁকিপূর্ণ। যেকোনো সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল ট্র্যাজেডির মতো ঘটনার জন্ম দিতে পারে।’