বিস্ফোরক মামলার বিচার এখনো শেষ হয়নি

বাংলা নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে ১৯৬৪ সাল থেকে রমনা বটমূলে বসে ছায়ানটের মিলনমেলা। নানা আনুষ্ঠানিকতায় ছায়ানটের শিল্পীরা নতুন বছরকে স্বাগত জানান। ২০০১ সালে সবাই যখন সুরের মূর্ছনায় স্নাত, ঠিক সেই সময় বোমার আঘাতে কেঁপে ওঠে প্রকৃতির ছায়াতল রমনা বটমূল। মুহূর্তেই ঝরে যায় ১০টি তাজা প্রাণ। আহত হয় অসংখ্য মানুষ।
বৈশাখের আহ্বান আবারও মনে করিয়ে দেয় ১৫ বছর আগের সেই ঘৃণ্য ঘটনা। ঘটনার ১৩ বছর পর ২০১৪ সালে হত্যা মামলার বিচার হলেও বিস্ফোরক আইনে দায়ের করা মামলাটির বিচারকাজ এখনো শেষ হয়নি।
২০১৪ সালের ২৩ জুন এ হত্যা মামলার রায়ে ১৪ আসামির আটজনের ফাঁসি আর বাকিদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন আদালত।
হত্যা মামলার রায়ের পর শুরু হয় বিস্ফোরক মামলার কার্যক্রম। কিন্তু সাক্ষীরা আদালতে হাজির না হওয়ায় মুখ থুবড়ে পড়েছে বিস্ফোরক আইনে মামলাটির ভবিষ্যৎ। বর্তমানে মামলাটি ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নুর উদ্দিনের আদালতে বিচারাধীন। এ আদালতে এই মামলার ৮৪ সাক্ষীর মধ্যে ২৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন আদালত।
আসামিপক্ষের আইনজীবী ফারুক আহমেদ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, এ মামলায় অভিযোগপত্রের ৮৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন আদালত। বাকি সাক্ষী না আসায় মামলা কার্যক্রম স্থবির হয়ে আছে। আদালত থেকে বারবার সাক্ষীদের প্রতি সমন, অজামিনযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দেওয়ার পরও সাক্ষীরা আদালতে সাক্ষ্য দিতে আসছে না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি আবু আবদুল্লাহ ভূঁইয়া সাংবাদিকদের বলেন, মামলাটি দীর্ঘদিন স্থগিত থাকার পর ২০১৬ সালে আবার বিচার শুরু হয়। তখন থেকে নতুন করে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। এ মামলায় এ পর্যন্ত ৮৪ জনের মধ্যে ২৪ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ মামলার বিচারকাজ কবে শেষে হবে, সে বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু বলা যাচ্ছে না।
নথি থেকে জানা যায়, ২০০১ সালের পয়লা বৈশাখের দিন ভোরে রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের জায়গায় দুটি বোমা পুঁতে রাখা হয় এবং পরে রিমোট কন্ট্রোলের সাহায্যে তা বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।
সকাল ৮টা ৫ মিনিটে একটি এবং ১০-১৫ মিনিট পর আরেকটি বোমা বিস্ফোরিত হয়। বিস্ফোরণে ঘটনাস্থলেই সাতজন নিহত হন। আহত হন ২০ থেকে ২৫ জন। পরে আহত ব্যক্তিদের মধ্যে আরো তিনজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
এ ঘটনায় নীলক্ষেত পুলিশ ফাঁড়ির সার্জেন্ট অমল চন্দ্র চন্দ ওই দিনই রমনা থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা করেন। পরবর্তী সময়ে ২০০৮ সালের ২৯ নভেম্বর মুফতি হান্নানসহ ১৪ জনকে আসামি করে ওই ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের (সিএমএম) আদালতে দুটি অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।