১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে জুতা নিয়ে বিক্ষোভ, মন্ত্রী গেলেন কড়া পাহারায়
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ছায়েদুল হকের আগমন ঠেকাতে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে জুতা নিয়ে বিক্ষোভ করেছে আওয়ামী লীগের একাংশের নেতাকর্মীরা। এ সময় দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমতিয়াজ আহমেদ আহত হয়েছেন।
সেই বিক্ষোভের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কড়া পাহারায় মন্ত্রী আজ রোববার বিজয়নগর উপজেলায় প্রাণিসম্পদ উন্নয়নকেন্দ্র উদ্বোধন করেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। দুপুরে মন্ত্রী ঘটনাস্থল ত্যাগ করার আগে বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
এই অনুষ্ঠানে স্থানীয় সংসদ সদস্য র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীকে দাওয়াত দেওয়া হয়নি। এ কারণে তাঁর সমর্থকরা খুব ক্ষুব্ধ ছিলেন। গত বৃহস্পতিবার বিজয়নগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সংবাদ সম্মেলন করে মন্ত্রীর অনুষ্ঠান বর্জনের ঘোষণা দেন। মন্ত্রীর আগমন ঠেকাতে উপজেলা আওয়ামী লীগ রোববার সকাল-সন্ধ্যা হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা করে। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম ভূঁইয়া গতকাল শনিবার জানান, অন্তত ২০ হাজার মানুষ মন্ত্রীর আগমন ঠেকাতে রাজপথে অবস্থান নেবেন।
তার আগে বৃহস্পতিবার রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী ছায়েদুল হক বিজয়নগরে যাওয়ার ঘোষণা দেন। হরতালের প্রসঙ্গ টেনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের সংসদ সদস্য র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীকে ইঙ্গিত করে মন্ত্রী বলেন, ‘এটা আমার ব্যক্তিগত সফর নয়। মানুষকে সেবা দেওয়ার জন্য বিল্ডিং (প্রাণিসম্পদ হাসপাতাল) উদ্বোধন করব। এতে আপনি (মোকতাদির চৌধুরী) বাধা দেবেন আর মন্ত্রী তো হাতে চুড়ি পরে বসে থাকবে না। আপনার যা ইচ্ছে করুন। আসেন, দেখান। আপনার যা দেখানোর ইচ্ছে।’
এই অবস্থায় যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, বিজয়নগর, আশুগঞ্জ ও সরাইল উপজেলায় ১৪৪ ধারা জারি করে স্থানীয় প্রশাসন। শনিবার দিবাগত রাত ১২টার পর থেকে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়।
হরতাল কর্মসূচি পালনের পাশাপাশি আজ রোববার সকাল থেকে বিজয়নগরে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে বিক্ষোভ করেন সংসদ সদস্য মোকতাদির চৌধুরীর সমর্থকরা। এ সময় সেখানে কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। নেতাকর্মীরা মুখে কালো কাপড় বেঁধে এবং হাতে জুতা নিয়ে রাস্তায় নামে। বিক্ষোভের মধ্যেই কড়া পাহারায় মন্ত্রী ছায়েদুল হক বিজয়নগরে যান।
এ সময় দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে চান্দুরা এলাকায় হরতাল সমর্থকদের হামলায় নবীনগর থানার ওসি আহত হন। তবে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে সংসদ সদস্যের সমর্থকরা বিক্ষোভ করলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেননি।
নবীনগর থানার ওসি আহত হওয়ার ঘটনায় আজ সন্ধ্যায় অজ্ঞাতনামা ৭০-৮০ জনকে আসামি করে বিজয়নগর থানায় মামলা করেছেন পুলিশ। বিজয়নগর থানার ওসি আলী আশরাফ এই তথ্য জানিয়েছেন।