আপন জুয়েলার্সে ফের অভিযান
আপন জুয়েলার্সের সিলগালা করে দেওয়া বিক্রয়কেন্দ্রে আবারও অভিযান চালিয়েছে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর।
আজ সোমবার বেলা ৩টার দিকে গুলশান-২ নম্বরের সুবাস্তু ইমাম টাওয়ারের আপন জুয়েলার্সের শাখায় অভিযানটি শুরু হয়।
অভিযানে নেতৃত্ব দেন শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের উপপরিচালক সাইফুর রহমান।
গতকাল রোববার গুলশানের এই এলাকায় সাপ্তাহিক ছুটি ছিল বলে অভিযান চালানো সম্ভব না হওয়ায় এই শাখাটি সিলগালা করা হয়েছিল। বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতিসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধি ও সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে অভিযান চালানো হয়।
রাজধানীর বনানীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রী ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি সাফাত আহমেদের বাবা আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ‘অবৈধ সম্পদ’ খুঁজতে তাঁর প্রতিষ্ঠানের পাঁচটি বিক্রয়কেন্দ্রে গতকাল অভিযান চালায় শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর। এ ছাড়া সাফাত, দিলদার আহমেদ ও আপন জুয়েলার্সের নামে থাকা ব্যাংক হিসাবের তথ্য চেয়ে সব ব্যাংকে গতকাল চিঠি দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।
এদিকে, আগামী ১৭ মে আপন জুয়েলার্স ও রেইনট্রি হোটেলের মালিককে তলব করেছে শুল্ক গোয়েন্দা কর্তৃপক্ষ।
গত ৬ মে ধর্ষণের অভিযোগ এনে বনানী থানায় মামলা করেন দুই ছাত্রীর একজন। এতে সাফাতসহ পাঁচজনকে আসামি করা হয়।
দুই ছাত্রী ধর্ষণ মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, গত ২৮ মার্চ রাত ৯টা থেকে পরের দিন সকাল ১০টা পর্যন্ত আসামিরা মামলার বাদী এবং তাঁর বান্ধবী ও বন্ধু শাহরিয়ারকে আটক রাখেন। অস্ত্র দেখিয়ে ভয়-ভীতি প্রদর্শন ও অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন। বাদী ও তাঁর বান্ধবীকে জোর করে ঘরে নিয়ে যান আসামিরা। বাদীকে সাফাত আহমেদ একাধিকবার এবং বান্ধবীকে নাঈম আশরাফ একাধিকবার ধর্ষণ করেন। আসামি সাদমান সাকিবকে দুই বছর ধরে চেনেন মামলার বাদী। তাঁর মাধ্যমেই ঘটনার ১০-১৫ দিন আগে সাফাতের সঙ্গে দুই ছাত্রীর পরিচয় হয়।
এজাহারে আরো বলা হয়েছে, ঘটনার দিন সাফাতের জন্মদিনে দুই ছাত্রী যান। সাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল ও দেহরক্ষী আবুল কালাম আজাদ তাঁদের বনানীর ২৭ নম্বর রোডের দ্য রেইনট্রি হোটেলে নিয়ে যান। হোটেলে যাওয়ার আগে বাদী ও তাঁর বান্ধবী জানতেন না সেখানে পার্টি হবে। তাঁদের বলা হয়েছিল, এটা একটা বড় অনুষ্ঠান, অনেক লোকজন থাকবে। অনুষ্ঠান হবে হোটেলের ছাদে। সেখানে যাওয়ার পর তাঁরা ভদ্র কোনো লোককে দেখেননি। সেখানে আরো দুই তরুণী ছিলেন। বাদী ও বান্ধবী দেখেন সাফাত ও নাঈম ওই দুই তরুণীকে ছাদ থেকে নিচে নিয়ে যাচ্ছিলেন। এই সময় বাদীর বন্ধু ও আরেক বান্ধবী ছাদে আসেন। পরিবেশ ভালো না লাগায় তাঁরা চলে যেতে চান। এই সময় আসামিরা তাঁদের গাড়ির চাবি শাহরিয়ারের কাছ থেকে নিয়ে নেন। তাঁকে খুব মারধর করেন। ধর্ষণ করার সময় সাফাত গাড়িচালককে ভিডিওচিত্র ধারণ করতে বলেন। বাদীকে নাঈম আশরাফ মারধর করেন এবং তিনি প্রতিবাদ করবেন বলে জানিয়েছিলেন। এরপর বাদী ও বান্ধবীর বাসায় দেহরক্ষী পাঠানো হয় তথ্য সংগ্রহের জন্য। তাঁরা এতে ভয় পেয়ে যান। লোকলজ্জার ভয় এবং মানসিক অসুস্থতা তাঁরা কাটিয়ে উঠে পরে আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে আলোচনা করে মামলার সিদ্ধান্ত নেন। এতে মামলা করতে বিলম্ব হয়।
এ ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া আপন জুয়েলার্সের মালিকের ছেলে সাফাত এবং সাকিফ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে রিমান্ডে রয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।