মৌসুমের শুরুতেই হতাশ পাবনার পেয়ারাচাষিরা
মৌসুমের শুরুতেই হতাশ হয়ে পড়েছেন পাবনার পেয়ারাচাষিরা। রাজনৈতিক অস্থিরতা, হরতাল-অবরোধের কারণে দেশের বিভিন্ন স্থানে পেয়ারার চালান পাঠাতে পারছেন না তাঁরা। ফলে প্রচুর ফলন থাকা সত্ত্বেও লোকসান গুনতে হচ্ছে তাঁদের।
চাষিরা জানান, পাবনা, সদর, ঈশ্বরদী ও আটঘরিয়া উপজেলায় এক হাজার ১০০ বিঘা জমিতে বাণিজ্যিকভাবে পেয়ারার চাষ হচ্ছে। হরতাল-অবরোধের কারণে গত মৌসুমেও পেয়ারা বিক্রি করে লাভ করতে পারেননি তাঁরা। উৎপাদন ভালো হওয়ায় এ বছর তারা সে ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার আশা করেছিলেন। মৌসুমের শুরুতে দামও ভালোই পাচ্ছিলেন। কিন্তু বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটের ডাকা অবরোধের কারণে তাঁদের সে আশার গুড়ে বালি।
চাষিদের অভিযোগ, যানবাহন সংকটের কারণে অতিরিক্ত পরিবহন খরচ দিয়েও পেয়ারা বিক্রি করতে পারছেন না তাঁরা। আগে প্রতি কার্টন (৬০ কেজি) পেয়ারা ঢাকায় পাঠাতে যেখানে ১৫০ টাকা খরচ হতো সেখানে অবরোধের কারণে প্রতি কার্টন পেয়ারা পাঠাতে খরচ পড়ছে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা।
ঈশ্বরদীর ছলিমপুর ইউনিয়নের ভাড়ইমারী গ্রামের চাষি সিদ্দিকুর রহমান জানান, ১২০ বিঘা জমিতে চাষ করে মৌসুমের শুরুতে প্রতি মণ পেয়ারা বিক্রি করেছেন চার হাজার ৮০০ টাকায়। কিন্তু অবরোধ শুরু হওয়ায় সেই পেয়ারাই তাঁকে বিক্রি করতে হচ্ছে দুই হাজার থেকে দুই হাজার ৮০০ টাকায়। পেয়ারা ঢাকায় পাঠাতে না পারায় বাধ্য হয়ে লোকসানে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করতে হচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পাবনার উপপরিচালক এ বি এম মোস্তাফিজার রহমান জানান, শুধু ঈশ্বরদী উপজেলার ৫০০ বিঘা জমিতে বাণিজ্যিকভাবে পেয়ারার আবাদ হয়। এ ছাড়া আটঘরিয়া ও সদরে আরো ৬০০ বিঘা জমিতে পেয়ারার আবাদ করা হয়। এমনকি বসতভিটাতেও এখন অনেকেই পেয়ারার চাষ করেন। গত বছর ঈশ্বরদীসহ গোটা জেলায় প্রায় আট কোটি টাকার পেয়ারা বিক্রি হয়। কিন্তু এবার অবরোধের কারণে পেয়ারা বিক্রিতে লাভ হবে কিনা তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন চাষিরা।