ডাঙায় উঠে বাংলাদেশ ছাড়ছে ‘মোরা’
দেশের উপকূল ছেড়ে এবার ডাঙায় উঠে এসেছে ঘূর্ণিঝড় মোরার কেন্দ্রভাগ। এই মুহূর্তে কিছুটা দুর্বল হয়ে কুমিল্লা, চাঁদপুর হয়ে ভারতের ত্রিপুরার দিকে এগোচ্ছে মোরা।
এরপর ত্রিপুরা হয়ে ঝড়টি ভারতের আসামের দিকে চলে যাবে বলে আজ মঙ্গলবার দুপুর একটার দিকে এনটিভি অনলাইনকে জানান আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহীনুল ইসলাম।
এর আগে বেলা ১১টার দিকে উপকূল থেকে সরে বাংলাদেশ অতিক্রম করতে শুরু করে মোরা।
সকালে আবহাওয়া অধিদপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শামসুদ্দিন আহমেদ জানান, সকাল সাড়ে ৬টার দিকে ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানে। প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা গতিবেগ ৮৯ কিলোমিটার, যা দমকা ও ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১১৭ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে।
ঘূর্ণিঝড় মোরার কারণে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর ও কক্সবাজারকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এই সংকেতের আওতায় রয়েছে নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এবং তাদের কাছাকাছি থাকা দ্বীপ ও চরগুলো।
অন্যদিকে মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরে গতকাল জারি হওয়া ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত বহাল রয়েছে। এই সংকেতের আওতায় রয়েছে ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের কাছাকাছি চর ও দ্বীপগুলো।
প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’র প্রভাবে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক ভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪-৫ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। এ ছাড়া এসব এলাকায় শুরু হওয়া বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে।
ঘূর্ণিঝড়ের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর প্রচণ্ড উত্তাল রয়েছে। উপকূলীয় এলাকার ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়াসহ গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সারা দেশে দূরপাল্লার নৌ চলাচল বন্ধ রয়েছে।
উপকূলীয় বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিতে আজ মঙ্গলবার সকালেও মাইকিং চলছে। দুর্যোগ মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতির কথা জানিয়েছে প্রশাসন। প্রস্তুত রাখা হয়েছে মেডিকেল টিমও।
দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রশাসনের তরফ থেকে বিভিন্ন স্থানে একাধিকবার প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।