বান্দরবানে ঘরবাড়ি-গাছপালা বিধস্ত, বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ
বান্দরবানে ঘূর্ণিঝড় মোরার আঘাতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ শত শত ঘরবাড়ি, গাছপালা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভেঙে বিধস্ত হয়েছে। বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে পড়েছে গোটা জেলায়।
আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে আলীকদম উপজেলায় গাছপালা ভেঙে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যায়।
জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে জেলা সদর, নাইক্ষ্যংছড়ি, আলীকদম, লামা, রুমা, থানচি ও রোয়াংছড়ি উপজেলায় ভারী বৃষ্টিপাত হয়। ঝড়ো বাতাসে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ইউনিয়ন পরিষদ ভবনসহ শত শত ঘরবাড়ি, গাছপালা বিধস্ত হয়। বাতাসে ভেঙে পড়ে অসংখ্য বিদ্যুতের খুঁটি, বিদ্যুতের তার ছিড়ে পড়ে রাস্তায়। এ কারণে বন্ধ হয়ে যায় বিদ্যুৎ সরবরাহ। লামা উপজেলায় বৃষ্টিতে পাহাড় ধসের ঘটনাও ঘটেছে। তবে কোনো প্রাণহাণির ঘটনা ঘটেনি।
বান্দরবান পৌরসভার কাউন্সিলর লুভু প্রু মারমা বলেন, মোরার আঘাতে উজানীপাড়া, মধ্যমপাড়ায় গাছপালা, বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে বহু ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পৌর শপিং কমপ্লেক্স মার্কেটসহ বাজারের অনেক দোকানপাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়াও শহরের বনরুপাপাড়া, বালাঘাটাসহ বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
আলীকদম উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম বলেন, আলীকদমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ শত শত ঘরবাড়ি ও গাছপালা বাতাসে ভেঙে পড়েছে। অভ্যন্তরীণ সব পথে রাস্তার ওপর গাছপালা ও বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বৃষ্টির মধ্যে গাছপালা ও বিদ্যুতের খুঁটি সরানোর কাজ চলছে। বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে সকাল থেকেই। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।
ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোরার আঘাতে লণ্ডভণ্ড হয়ে পড়েছে মিয়ানমার সীমান্তবর্তী ঘুমধুম ইউনিয়ন। ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের চালসহ বাজারের দোকানপাটের টিন বাতাসে উড়িয়ে নিয়ে গেছে। বিদ্যুতের খুঁটি ও গাছপালা ভেঙে পড়েছে রাস্তায়।
বাইশারী ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলম বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বাইশারী বাজারের বহু দোকানপাট ভেঙে যায়। এ ছাড়া রাবার বাগানের গাছপালা ভেঙে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
লামা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান থোয়াইনু অং চৌধুরী বলেন, লামা উপজেলায় বাতাসে গাছপালা ভেঙে বহু ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রুপসীপাড়া ইউনিয়নে গাছ ভেঙে পড়ে ক্যাচিং থোয়াই (৪০) নামের একজন আহত হয়েছেন। তাঁকে উদ্ধার করে চকরিয়া হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন স্থানে পাহাড় ধসের ঘটনাও ঘটেছে।
জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোরা মোকাবিলায় জেলায় ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়। ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলো থেকে লোকজনকে নিরাপদ স্থানে যেতে মাইকিং করা হয়েছে। উপকূল এলাকার পাশ্ববর্তী অঞ্চল হওয়ায় জেলার বহু ঘরবাড়ি ভেঙেছে। গাছপালা ও বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়েছে রাস্তা ও ঘরবাড়িতে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি প্রয়োজনীয় সরকারি সহযোগিতা দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।