পাহাড় ধস-বন্যায় সারা দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন বান্দরবান
টানা বর্ষণে পাহাড় ধস ও বন্যায় বিপর্যস্ত শহরে পরিণত হয়েছে বান্দরবান। আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে সারা দেশের সঙ্গে এ জেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
বঙ্গোসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে বান্দরবান-কেরানীহাট চট্টগ্রাম প্রধান সড়কের বাজালিয়ার বরদুয়ারাসহ কয়েকটি স্থানে বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে কয়েক কিলোমিটার সড়কপথ। অপরদিকে বান্দরবান-রাঙামাটি সড়কের পুলপাড়া বেইলি ব্রিজ বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা। সড়কে চলছে নৌকা। অনেকে ভ্যান গাড়িতে করেও তলিয়ে যাওয়া সড়কপথ পাড়ি দিচ্ছেন।
অপরদিকে রুমা উপজেলা সড়কের দলিয়ানপাড়া এলাকায় পাহাড় ধসে দুই দিন ধরে উপজেলার সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ আছে।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে গত রোববার থেকে বান্দরবান শহরসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে অবিরাম বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় বান্দরবানে ৩০৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এটি সাম্প্রতিক সময়ে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড বলে জানিয়েছেন মৃত্তিকা ও পানি গবেষণা কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মাহাবুবুর রহমান।
এদিকে টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে বান্দরবানে সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে বান্দরবানের আর্মিপাড়া, ওয়াবদাব্রিজ, শেরে বাংলানগর, মেম্বারপাড়া, ইসলামপুরসহ আশপাশের এলাকার দুই শতাধিক ঘরবাড়ি। বন্যায় তলিয়ে গেছে শহরের অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোও। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে পাঁচ হাজারের বেশি মানুষ। বন্যা দুর্গত এলাকার লোকজন আল ফারুক স্কুল, শহর প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বিভিন্নস্থানে পাঁচটি আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে।
আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থানকারী জোসনা খাতুন ও মোহাম্মদ জামাল বলেন, বন্যায় ঘরবাড়ি তলিয়ে যাওয়ায় পরিবার-পরিজন নিয়ে গতকাল রাত থেকে তাঁরা আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছেন। রমজান মাসে এমন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক জানান, দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে বান্দরবান সদরে পাঁচটি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। সারা দেশের সঙ্গে বান্দরবানের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। পাহাড় ধসে শিশুসহ ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত পাঁচজনকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বসবাসকারীদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে।