বগুড়ায় সেই ছাত্রীকে ধর্ষণের প্রমাণ পাওয়া গেছে
বগুড়ায় ধর্ষণের শিকার সেই ছাত্রীর মেডিকেল ও ফরেনসিক পরীক্ষায় ধর্ষণের প্রমাণ পাওয়া গেছে। আজ শুক্রবার দুপুরে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী বিষয়টি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
পুলিশ কর্মকর্তা জানান, আদালতের নির্দেশে গত ১ আগস্ট মেয়েটিকে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে নেওয়া হয়। ফরেনসিক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক কে এম সাইফুল ইসলামকে প্রধান করে গঠিত দল তার পরীক্ষা করেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এ প্রতিবেদন পেয়েছে পুলিশ।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরো জানান, মেয়েটি অপ্রাপ্তবয়স্ক ও ধর্ষণ করা হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ আছে।
এর আগে গত মঙ্গলবার ধর্ষণ ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার সেই ছাত্রী দুটি আদালতে জবানবন্দি দেয়।
মেয়েকে ধর্ষণের পর মা-মেয়ের মাথা ন্যাড়া করে শারীরিক নির্যাতনের ঘটনায় দুটি মামলা করা হয়। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসামি বগুড়া শহর শ্রমিক লীগের আহ্বায়ক তুফান সরকার ও তাঁর সহযোগীরা এসএসসি পাস ওই ছাত্রীকে ভালো কলেজে ভর্তি করার কথা বলে গত ১৭ জুলাই শহরের নামাজগড় এলাকায় তাঁদের বাড়িতে নিয়ে ধর্ষণ করেন। পরে এ ঘটনা কাউকে না জানাতে ভয়ভীতি দেখিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেন। ধর্ষণের ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে গত শুক্রবার বিকেলে তুফান সরকারের স্ত্রী আশা ও তাঁর বড় বোন বগুড়া পৌরসভার সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলর মার্জিয়া আক্তার রুমকিসহ কয়েকজন মিলে ওই ছাত্রী ও তাঁর মাকে বেধড়ক পিটিয়ে মাথা ন্যাড়া করে দেন। সেই সঙ্গে বগুড়া ছাড়ার হুমকি দেন। মা ও মেয়েকে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
হাসপাতালে মেয়ের মা বলেছেন, ‘আমরা সমাধানের জন্য কমিশনারের (কাউন্সিলর) কাছে গেছি। কমিশনার উল্টা মা আর মেয়ের চুল কেটে, এসএস পাইপ দিয়ে আমাদের মা-মেয়েকে মারছে। অনেক নির্যাতন করছে। পাঁচ মিনিট পরপর টর্চারিং, পাঁচ মিনিট পরপর আমাদের মাইর। কমিশনার (কাউন্সিলর), কমিশনারের মা ও তাঁর বোন আশা এই তিনজনার চরম বিচার চাই, চরম শাস্তি হোক।’
পুলিশ মূল আসামি তুফান, তাঁর সহযোগী রূপম, আলী আজম ও আতিকুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে। ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে শনিবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন আতিকুর। এছাড়া বাকিদেরও রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে পুলিশ তুফান সরকারের শ্বশুর জাহিদুল ও নাপিত জীবনকে বগুড়া শহর থেকে গ্রেপ্তার করে। সন্ধ্যার পর বগুড়া গোয়েন্দা পুলিশের বিশেষ দল পাবনা শহরের হেমায়েতপুরে অভিযান চালিয়ে কাউন্সিলর মার্জিয়া আকতার রুমকি ও তাঁর মা রুমিকে গ্রেপ্তার করে। এ ছাড়া ঢাকায় ডিবি পুলিশের একটি দল সাভার থেকে তুফানের স্ত্রী আশা, গাড়িচালক জিতু ও সহযোগী মুন্নাকে গ্রেপ্তার করে।