মিরপুর অভিযান : কী দেখলেন প্রত্যক্ষদর্শী
রাজধানীর মিরপুরের দারুস সালাম এলাকায় বাঁধন রোডের একটি ছয়তলা বাড়ি জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে গতকাল মধ্যরাতের পর থেকে ঘিরে রেখেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানের দক্ষিণ পাশের বর্ধনবাড়ির সেই ‘আস্তানা’ থেকে আসা বিকট শব্দে ঘুম ভেঙে যায় এলাকার বাসিন্দাদের। প্রথমে বিষয়টি বুঝতে না পারলেও খানিক পরেই তাঁরা র্যাবের অভিযান সম্পর্কে জানতে পারেন।
বর্ধনবাড়ির যে বাড়িটিতে অভিযান চলছে, সেই বাড়িটির নম্বর ২/৩/বি। এর মালিক টিঅ্যান্ডটির কর্মকর্তা মোহাম্মদ আজাদ। বাড়িটির নাম ‘কমলপ্রভা’। আজাদ সাহেব নিজে স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে বাড়ির দ্বিতীয় তলায় থাকেন।
এই বাড়ির পাশের ২/২০/এ নম্বর টিনশেড বাড়িতে থাকেন ধানমণ্ডি নিউ মডেল কলেজের বিবিএর শিক্ষার্থী হাফিজুর রহমান দীপু। মধ্যরাতের পর থেকেই তিনি ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী।
হাফিজুর রহমান দীপু আজ মঙ্গলবার সকালে এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘ঈদের ঘোরাঘুরি শেষে ঘুমাচ্ছিলাম। রাত ১২টার পর বিকট শব্দে ঘুম ভেঙে যায়। প্রথমে ভেবেছিলাম, ট্রান্সফরমার ব্লাস্ট হয়েছে। জানালা খুলে দেখি প্রচণ্ড ধোঁয়া। পর পর চার/পাঁচটি বিস্ফোরণ হয়। এর পরই বাসার সবাই দরজা-জানালা বন্ধ করে বের হয়ে যাই।’
এর আগে সকালে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ জানিয়েছেন, বাড়ির ভেতরে থাকা ‘জঙ্গিরা’ ছাদ থেকে র্যাবকে লক্ষ্য করে হাতে তৈরি গ্রেনেড (আইইডি) ও পেট্রলবোমা ছুড়ে মারে। এ সময় র্যাবের সঙ্গে তাদের কয়েক দফা গোলাগুলি হয়।
‘জঙ্গিদের’ আত্মসমর্পণের জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। ভেতরে কয়জন ‘জঙ্গি’ আছে, তা এখনো স্পষ্ট নয় বলেও জানিয়েছেন র্যাবের কর্মকর্তা মুফতি মাহমুদ।
প্রত্যক্ষদর্শী দীপু আরো বলেন, ওই বাড়িতে মোহাম্মদ আবদুল্লাহ (৩৫) নামের একজন ব্যবসায়ী ভাড়া থাকেন। বাড়ির ছাদে তাঁর আইপিএস ও ইউপিএসের কারখানা আছেন। তিনি আগে নিচতলায় ছিলেন। পরে ছাদে ভাড়া নেন। তাঁর দুই স্ত্রী। ১৫ বছর ধরে এ বাড়িতে আছেন। এলাকায় তিনি ধর্মভীরু মানুষ হিসেবে পরিচিত।
র্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ আরো বলেছিলেন, “টাঙ্গাইলে একটি বাড়ি থেকে গতকাল রাতে অভিযান চালিয়ে দুই ‘জঙ্গিকে’ আটক করা হয়েছে। আমাদের কাছে তথ্য ছিল, তাদের আরেকজন ‘দুধর্ষ জঙ্গি সদস্য’ দারুস সালামে অবস্থান করছে।”
মধ্যরাতের পর থেকে বর্ধনবাড়ির ২/৩/বি বাড়িটি ঘিরে ফেলে র্যাব।