রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারকে চাপ দেওয়া হচ্ছে : ত্রাণমন্ত্রী
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2017/10/03/photo-1507051305.jpg)
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সীমান্তের জিরো লাইনে অবস্থানকারী মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের রেজিস্টার্ড আশ্রয়কেন্দ্রে স্থানান্তর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া আনুষ্ঠানিকভাবে রোহিঙ্গা স্থানান্তর কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
এ সময় অন্যদের মধ্যে ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শাহ কামাল, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহাবুবুর রহমান, জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক, ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ, নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউপির চেয়ারম্যান তসলিম ইকবাল চৌধুরীসহ সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন মায়া বলেছেন, নিরাপত্তার স্বার্থে সীমান্তের জিরো পয়েন্টে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা রেজিস্টার্ড আশ্রয়শিবিরে সরিয়ে আনা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সব রোহিঙ্গাকে সরকারিভাবে বানানো আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে স্থানান্তর করা হবে।
ত্রাণমন্ত্রী আরো বলেন, রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে কূটনৈতিকভাবে মিয়ানমার সরকারকে চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে মিয়ানমার সরকারের সঙ্গেও আলাপ-আলোচনা চলছে। সরকার রোহিঙ্গাদের সহযোগিতায় ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে। যতদিন পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেবে না মিয়ানমার সরকার, ততদিন পর্যন্ত সরকার রোহিঙ্গাদের সাহায্য-সহযোগিতা চালিয়ে যাবে।
বান্দরবানের জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক জানান, প্রথম দফায় নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমঘুম ইউনিয়নের তুমব্রু সীমান্তের কোনাপাড়ায় জিরো পয়েন্টের অস্থায়ী ক্যাম্পে অবস্থানকারী ৫০ রোহিঙ্গা পরিবারের প্রায় ৪০০ রোহিঙ্গাকে সরিয়ে কক্সবাজারের কুতুপালং রেজিস্টার্ড আশ্রয়শিবিরে স্থানান্তর করা হয়েছে। শরণার্থী প্রত্যাবাসন কমিশনের (আরআরসি) পক্ষ থেকে দেওয়া চারটি ট্রাকে করে রোহিঙ্গাদের রেজিস্টার্ড ক্যাম্পে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
পর্যায়ক্রমে ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু পশ্চিমকূল এবং নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের চাকঢালার ছনখোলা, চেরার মাঠ, সাপমারা ঝিরি ও ফুলতলী এলাকায় আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের কক্সবাজারের বালুখালী এবং কুতুপালং রেজিস্টার্ড ক্যাম্পে স্থানান্তর করা হবে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সরকারি বাহিনীর দমন-পীড়নে টিকতে না পেরে গত ২৫ আগস্ট থেকে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকাগুলো ছাড়াও বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের জিরো লাইন এলাকায় প্রায় ৫৫ হাজার রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে। তবে এসব এলাকায় বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধন সুবিধা না থাকায় নিবন্ধন এবং ত্রাণ ও আবাসন সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য সরকার তাদেরকে কক্সবাজার জেলার উখিয়া উপজেলাধীন বালুখালী, কুতুপালং ও থাইনখালী রেজিস্টার্ড আশ্রয়শিবিরে সরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় প্রথম দফায় কোনাপাড়া জিরো লাইন অস্থায়ী ক্যাম্প থেকে ৫০ পরিবারকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।