রাজনৈতিক ঐকমত্য না হলে গভীর সংকটের আশঙ্কা

নির্বাচন কমিশনকেই তত্ত্বাবধায়ক বা নির্দলীয় সরকারের বিকল্প হিসেবে গড়ে তুলে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব বলে মনে করেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাখাওয়াত হোসেন। আর প্রশাসনিক সংস্কার নিশ্চিত না হলে দল নিরপেক্ষ সরকারের অধীনেও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয় বলে মনে করেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার।
urgentPhoto
এ বিষয়ে দ্রুত রাজনৈতিক ঐকমত্য না হলে দিনে দিনে সংকট আরো গভীর হবে বলেও মনে করেন তাঁরা।
‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন বেগম খালেদা জিয়া’ এমন শিরোনামে সম্প্রতি খবর প্রকাশিত হয় বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে। অনেকের কাছে, নির্বাচন প্রশ্নে সমঝোতার জন্য এটি ছাড়ের ইঙ্গিত আবার কারো কারো মতে এতে কোনো অবস্থান স্পষ্ট করেননি খালেদা জিয়া বরং আগের দাবির প্রতিই অনড় রয়েছেন। তবে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য বিকল্প উপায় খোঁজাটাকেই এখন জরুরি বলে মনে করেন এই দুই বিশ্লেষক।
এ ব্যাপারে সাখাওয়াত হোসেন এনটিভিকে বলেন, ‘যদি ভারতের উদাহরণ দেই, সেখানে তো নির্বাচন কমিশনই তত্ত্বাবধায়ক সরকার হয়ে যায়। তখন সব ক্ষমতা প্রায় তাদের (নির্বাচন কমিশন) কাছে চলে আসে। এমনকি মন্ত্রিসভার তত্ত্বাবধানেও নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা থাকে। আমাদের নির্বাচন কমিশন যথেষ্ট শক্ত আছে। আরো কিছু কিছু আইন আছে, সেগুলোকে আরো শক্ত করা গেলে সম্ভব। আমি তো মনে করি এটাই এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।’
সাখাওয়াত হোসেন আরো বলেন, ‘সংশোধন করার ক্ষমতা যদি তাদের (নির্বাচন কমিশন) থাকে উনারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতিতে ফিরে যাবেন কি না- এটা কিন্তু এখন পর্যন্ত বিএনপির কারো কাছ থেকে শুনিনি। তাহলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার উনি (বিএনপি চেয়ারপারসন) যেটা চাচ্ছেন সেটা কি এ নির্বাচনের জন্য। না আগামী নির্বাচনগুলোর জন্য।’
এ ব্যাপারে সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘বর্তমান প্রধানমন্ত্রী এবং তাঁর মন্ত্রিসভা যদি নাও থাকে, কিন্তু দলীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, দলীয় প্রশাসন যদি নিজ নিজ অবস্থানে থাকে তাহলে বর্তমান সরকারই আবার ক্ষমতায় আসবে। পক্ষপাতদুষ্ট প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাঁদের নিজেদের স্বার্থেই নিশ্চিত করবে যাঁরা ক্ষমতায় আছে তাঁরাই যেন ক্ষমতায় ফিরে আসে।’
বদিউল আলম আরো বলেন, ‘যে অবস্থার মধ্যে আমরা আছি এটা টেকসই না। এটা টিকে থাকবে না। তবে এটা যেন আমাদের অমঙ্গল ডেকে না আনে, আমাদেরকে একটা বিপদের দিকে, অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে না দেয় সেজন্য আমি মনে করি আলাপ-আলোচনার কোনো বিকল্প নেই। আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে হবে।’
গত শনিবার রাতে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আইনজীবী সমিতির নবনির্বাচিত নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় খালেদা জিয়া বলেছিলেন, ‘আওয়ামী লীগের অধীনে কখনো সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। দেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য নিরপেক্ষ সরকারের দরকার। আমি বলব না তত্ত্বাবধায়ক, যে নামেই হোক না কেন, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে সে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে, সেখানে যাঁদেরকে জনগণ ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবে তাঁরাই দেশের দায়িত্ব নিয়ে দেশের জন্য কাজ করবে।’