সেই কিশোরের ভাঙা মোবাইল ফোন উদ্ধার
রাজধানীর মিরপুর থানা এলাকায় গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হওয়া কিশোরের মোবাইল ফোন ভাঙা অবস্থায় পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে পুলিশকে ওই কিশোরের মা-বাবা জানিয়েছেন, ফোনটি তাঁরাই ভেঙেছেন।
গতকাল সোমবার সাড়ে ৯টায় থানার কাজীপাড়া মসজিদের পশ্চিম পাশে এক বাসা থেকে সায়েম (১৬) নামের ওই কিশোরের লাশ উদ্ধার করা হয়। সে তার বাবা সঙ্গে ফুটপাথে একটি চায়ের দোকানে কাজ করত। মৃত্যুর পর তার হাতে নীল তিমির ছবি আঁকা দেখা যায়। সায়েম কথিত অনলাইন নির্ভর গেম ‘ব্লু হোয়েল’ খেলে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে বলা ধারণা করছেন তার পরিবারের সদস্যরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মিরপুর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মিজানুর রহমান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সায়েমের লাশ উদ্ধার করেছে। গতকাল রাতেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে তার লাশ পোস্টমর্টেমের জন্য পাঠানো হয়। সায়েমের মৃতদেহের পাশে কোনো আত্মহত্যার চিঠি পাওয়া যায়নি।
পরিদর্শক মিজানুর আরো জানান, নিহত সায়েমের মা-বাবা ও তার পরিবার অভিযোগ করেছেন ব্লু হোয়েল গেম খেলে আত্মহত্যা করেছে সায়েম। এ জন্য সায়েমের ব্যবহৃত ওয়ালটনের অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোনটি রাগে ভেঙে ফেলেছেন তাঁরা। ফোনটি পুলিশ উদ্ধার করেছে। সেটি থেকে কোনো তথ্য পাওয়া যায় কি না, তা যাচাই করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে নিহত সায়েমের এক বন্ধু আজ মঙ্গলবার সকালে জানায়, সায়েম তাদের সঙ্গে প্রায় প্রতিদিনই ক্রিকেট খেলত। মারা যাওয়ার আগের দিন রাত ১২টার দিকেও সায়েমের সঙ্গে দেখা ও কথা হয়েছে তাদের। সে সময় তাকে দেখে বা কথাবার্তা শুনে কোনো অস্বাভাবিক কিছু মনে হয়নি। সে আরো জানায়, সায়েম বন্ধুদের সঙ্গে সব সময় উৎফুল্ল থাকত। তাকে দেখে কখনোই সন্দেহজনক কিছু মনে হয়নি।
কাজীপাড়ায় সায়েমের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, নিহতের শোকাহত পরিবারের লোকজন বারবার কান্নায় ভেঙে পড়ছে। তার মা-বাবা কেউই কথা বলার মতো অবস্থায় নেই।
এর আগে ৫ অক্টোবর রাজধানীর ধানমণ্ডির সেন্ট্রাল রোডের ৪৪ নম্বর বাসার ৫বি ফ্ল্যাটের বাসা থেকে অপূর্বা বর্ধন স্বর্ণা নামের এক কিশোরীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। এর পর থেকেই তার পরিবারের সন্দেহ যে তাদের মেয়ে ‘ব্লু হোয়েল’ গেমে আসক্ত হয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।