শেরপুরে অভাব অনটনে শিশুর আত্মহত্যা!
শেরপুর সদরের গাজীরখামার ইউনিয়নের চককুমড়ি গ্রামে অভাবে এক শিশু আত্মহত্যা করেছে বলে জানা গেছে। তার নাম কনিকা বেগম (১০)। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে নিজ বাড়িতে ঝুলন্ত অবস্থায় শিশুটির লাশ পাওয়া যায়।
কনিকার বাবা কুরবান আলী পেশায় মৎস্যজীবী। তিনি জানান, অভাব-অনটনের জন্যই তাঁর মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। সে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্যের কাছে কার্ড চেয়েছিল, কিন্তু পায়নি। তাঁদের অভাব-অনটন চলছিল। আর এ অভাব-অনটন সহ্য করতে না পেরে তাঁর মেয়ে আত্মহত্যা করেছে।
নিহত কনিকার বাবা আরো জানান, ঘটনার দিন সকালে তিনি ভাত খেয়ে বিলে মাছ ধরতে যান। পরে খবর পান তাঁর মেয়ে আত্মহত্যা করেছে।
প্রতিবেশী ইয়ানুছ আলী জানান, সকালে ভাত রান্না করে মাছ কাটছিল কনিকা। এ সময় সে ছোট ভাইকে দোকানে কাঁচামরিচ কিনতে পাঠায়। দোকান থেকে ছোট ভাই ফিরে এসে ঘরের দরজা বন্ধ দেখতে পায়। পরে জানালা উঁকি দিয়ে দেখে ঘরের আড়ার (সিলিং) সঙ্গে দড়িতে ঝুলে আছে কনিকা।
ইয়ানুছ আলী জানান, কুরবান আলীর প্রথম স্ত্রীর ঘরের দুই সন্তানের মধ্যে মেয়ে কনিকা ও ছোট আরেকটি ছেলে। বেশ কিছুদিন আগে কুরবান আলীর প্রথম স্ত্রী মারা যান। পরে তিনি আরেকটি বিয়ে করেন। দ্বিতীয় স্ত্রী প্রথম থেকেই কনিকা আর তার ছোট ভাইকে মেনে নিতে পারেননি। তাই তিনি ঝগড়া করে বাপের বাড়িতে চলে যান। এর পর থেকেই কনিকা ও ছেলেকে সঙ্গে নিয়েই ছিলেন কুরবান আলী।
মেয়ের মৃত্যুর ব্যাপারে কুরবান আলী বলেন, ‘মেম্বার কার্ড দেয় নাই। কার্ড চাইছি, কইছে কার্ড নাই, পরে দিমু। কার্ড না পাবার কারণেই আমার অভাব-অনটন।’
এ ব্যাপারে গাজীরখামার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আওলাদুল ইসলাম বলেন, ‘আমার জানামতে ওই লোক মৎস্যজীবী। আর কার্ড না পাওয়ার কথা আমাকে কেউ জানায়নি। শিশুটি আত্মহত্যার পর আমি জানতে পেরেছি। যার ফলে নিয়ম অনুযায়ী ময়নাতদন্ত শেষে মেয়েটির মরদেহ আনা এবং দাফনের ব্যবস্থা করেছি।’