তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীকে গণধর্ষণ, চুল কেটে মারধর
লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলায় তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীকে (২৩) অপহরণ করে সাবেক স্বামী তাঁর সহযোগীদের নিয়ে গণধর্ষণ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ সময় কাঁচি দিয়ে ওই নারীর মাথার চুল কেটে মারধরও করা হয়।
গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় কমলনগর উপজেলা থেকে ওই নারীকে অপহরণ করা হয়। শনিবার বিকেলে ওই নারীকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
অভিযুক্ত স্বামী আবু কালাম (৩৫) পাশের তোরাবগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা। নির্যাতিত নারীর বাড়ি কমলনগর উপজেলায়। তাঁর ছয় ও আট বছর বয়সী দুটি ছেলে-মেয়ে রয়েছে।
নির্যাতিতার মা বলেন, ‘১০ বছর আগে আবুল কালামের সঙ্গে আমার মেয়ের বিয়ে হয়। এর পর থেকে একাধিকবার নানা অজুহাতে যৌতুক নেয় আবু কালাম। গত বছর ৫০ হাজার টাকার জন্য চাপ দেয়। টাকা না দেওয়ায় কারণে-অকারণে আমার মেয়েকে মারধর করে আবুল কালাম। উপায় না দেখে আদালতের মাধ্যমে পাঁচ মাস আগে স্বামীকে তালাক দেয় আমার মেয়ে। এর জের ধরে আবুল কালাম তাঁর তিন বন্ধুকে নিয়ে মেয়েকে অপহরণ করে। এ সময় কাঁচি দিয়ে মাথার চুল এলোমেলো করে কেটে দেওয়া হয়। একপর্যায়ে তাঁকে মারধর শুরু করা হয়। এরপর চলে থেমে থেমে নির্যাতন।’
নির্যাতিত ওই নারী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাংবাদিকদের জানান, শুক্রবার বিকেলে সদর উপজেলার শাহপুর গ্রামে তাঁর ভাইয়ের বাসায় যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হন। সন্ধ্যায় তোরাবগঞ্জ এলাকায় পৌঁছালে তালাকপ্রাপ্ত স্বামী ও তাঁর তিন বন্ধু মিলে সিএনজিচালিত অটোরিকশা থেকে টেনে নামায় এবং চোখ বেঁধে বেদম মারধর করে। এরপর তাঁকে আবুল কালামের বাড়ির একটি ঘরে বন্দি করে রাখে। এ সময় তাঁকে মারধর ও চুল কেটে নির্যাতন করা হয়। পরে রাতভর গণধর্ষণ করে। একপর্যায়ে তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। ভোরে তারা রাস্তার পাশে তাঁকে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। এরপর স্থানীয়দের সহযোগিতায় পরিবারের লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।
এ ব্যাপারে আবু কালামের মোবাইল ফোনে রাত পৌনে ৮টায় একাধিকবার কল করলেও বন্ধ পাওয়া যায়।
লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) আনোয়ার হোসেন বলেন, নির্যাতিত ওই নারীকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তাঁকে মারধর ও মাথার চুল কেটে দেওয়ার আলামত পাওয়া গেছে। তবে ধর্ষণের বিষয়টি ডাক্তারি পরীক্ষার পরে নিশ্চিত করে বলা যাবে।
কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকুল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ‘ঘটনাটি শুনেছি। বিস্তারিত খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে। এ ঘটনায় জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’