বাসা ভাড়ার নাম করে ঢোকে দুর্বৃত্তরা : নিলয়ের স্ত্রী
বাসা ভাড়া নেওয়ার নাম করে তিন যুবক ঘরে প্রবেশ করে ব্লগার নিলয় নীলকে কুপিয়ে হত্যা করেছে বলে তাঁর স্ত্রী আশা মনি জানিয়েছেন। গতকাল শুক্রবার হত্যাকাণ্ডের পর সাংবাদিকদের সামনে এ কথা বলেন তিনি। এ সময় তিনি বার বার কান্নায় ভেঙে পড়ছিলেন।
আশা মনি বলেন, ‘বাসা ভাড়ার নাম করে একজন যুবক তাদের বাসার ভেতরে ঢুকে বিভিন্ন রুম ঘুরে দেখতে থাকে। এ সময় নিলয় বাড়িওয়ালার সঙ্গে তাকে যোগাযোগ করতে বললে যুবকটি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। এ সময় যুবকটি ফোন দিয়ে আরো দুজনকে ডেকে আনে। পরে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে নিলয়কে হত্যা করে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।’
নিহত নিলয়ের স্ত্রী আক্ষেপ করে বলেন, ‘কেউ বাঁচাইতে আসে নাই ভাই।’
প্রত্যক্ষদর্শী অন্য এক নারী বলেন, “(দুর্বৃত্তদের কাছে) কালো ব্যাগ আছিল। ব্যাগের থেইক্যা দাউ-টাউ কি কি আছিল বাইর করছে। ‘আল্লাহু আকবর নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবর নারায়ে তাকবির’ এইডা কইয়া বলে বাইর হইয়া গেছে।”
নিলয় ফেসবুক ও ব্লগে ধর্ম ও জঙ্গিবাদ নিয়ে লেখালেখি করতেন। ফেসবুক আইডিতে তিনি বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সংগঠনের সদস্য হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিয়েছেন। এ ছাড়া তিনি বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছিলেন। কী কারণে, কারা তাঁকে হত্যা করেছে- তা খতিয়ে দেখছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তবে এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদার ভারতীয় উপমহাদেশের (একিউআইএস) বাংলাদেশ শাখা আনসার আল ইসলাম এ হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে বিবৃতি দিয়েছে।
আড়াই মাস আগে নিলয় নীল এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন, তাঁকে দুজন লোক সন্দেহজনকভাবে অনুসরণ করছে। এ বিষয়ে নিলয় থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে গেলে পুলিশ তা নেয়নি বলে তিনি উল্লেখ করেন। নিলয় গণজাগরণ মঞ্চের কর্মী ছিলেন বলে দাবি করা হয় গণজাগরণ মঞ্চের পক্ষ থেকে।
হত্যাকাণ্ডের খবর ছড়িয়ে পড়লে শুক্রবার বিকেলে শাহবাগে প্রতিবাদ সমাবেশ করে গণজাগরণ মঞ্চ। ব্লগার হত্যাকাণ্ডের বিচার না হওয়ায় একের পর এক এ ধরনের খুন হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন সংগঠনটির মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার। তিনি বলেন, ‘যখন অপরাধীদের রাষ্ট্র পৃষ্ঠপোষকতা করে, তখন অপরাধ তো সংঘটিত হবেই।’
ব্লগার নিলয় হত্যাকাণ্ডের আগে আহমেদ রাজীব হায়দার, অভিজিত রায়, ওয়াশিকুর রহমান, অনন্ত বিজয় দাসকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।