এবার হাইকোর্টে ক্ষমা চাইলেন লক্ষ্মীপুরের সেই এডিসি
লক্ষ্মীপুরের সাবেক সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন শরীফকে সাজা দেওয়ার ঘটনায় নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেছেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিসি) শেখ মুর্শিদুল ইসলাম ও সাজা প্রদানকারী নির্বাহী হাকিম (ম্যাজিস্ট্রেট) মো. নুরুজ্জামান।
আজ বুধবার সকালে বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে তাঁরা ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
আদালতে এডিসির পক্ষে অ্যাডভোকেট আবদুল বাসেত মজুমদার এবং নির্বাহী হাকিমের পক্ষে অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ন আবেদন দাখিল করেন। তাঁরা বলেন, ‘আমরা এ ঘটনায় নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করছি। আশা করি, আমাদের মাফ করে দেবেন।’
পরে শুনানি শেষে আদালত তাঁদের নিঃশর্ত ক্ষমা করে দেন। এ সময় আদালত সরকারের জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উদ্দেশে বলেন, সরকারি কর্মকর্তারা যেন কোনোভাবেই ক্ষমতার অপব্যবহার না করেন, সেটি নিশ্চিত করতে হবে।
এর আগে এডিসি শেখ মুর্শিদুল ইসলামের সঙ্গে ‘অসদাচরণের’ অভিযোগে ডা. শরীফকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে তিন মাসের সাজা দেওয়া হয়। ওই ঘটনার পর মুর্শিদুল ইসলামকে লক্ষ্মীপুর থেকে প্রত্যাহার করা হয়।
গত ৪ ডিসেম্বর জেলা প্রশাসন পরিচালিত শহরের কাকলি স্কুলের প্রবেশপথে আগে-পরে যাওয়াকে কেন্দ্র করে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শেখ মুর্শিদুল ইসলাম ও ডা. সালাহ উদ্দিন শরীফের বড় ছেলে মিনহাজের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। এ সময় ডা. সালাহ উদ্দিন এগিয়ে এসে পরিচয় জানতে চান। কিন্তু এডিসি পরিচয় না দিয়ে তাঁর সঙ্গে কথাকাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়েন।
পরে পুলিশ ডেকে চিকিৎসককে আটক করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয় সালাহ উদ্দিন শরীফকে।
খবর পেয়ে জেলায় কর্মরত চিকিৎসকরা ক্ষুব্ধ হয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ছুটে যান। বিক্ষুব্ধ অবস্থায় চিকিৎসকরা প্রশাসনের সব সেবা কার্যক্রম ও সব হাসপাতাল-ক্লিনিক বন্ধ রাখার হুমকি দিয়ে ওই চিকিৎসকের মুক্তি দাবি করেন।
জেলা প্রশাসক হোমায়রা বেগমের সঙ্গে প্রায় আধা ঘণ্টার মতো রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন চিকিৎসকরা। বৈঠকে চিকিৎসকরা তড়িঘড়ি করে সাজা দেওয়ার বিষয় নিয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে প্রশ্ন তোলেন। এ সময় জেলা প্রশাসক আপিল করলে সহযোগিতার আশ্বাস দেন চিকিৎসকদের।