মাগুরায় স্মারকলিপি দেওয়ার পর দুজন আটক, পরে মুক্তি

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে মাগুরা জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে জেলা বিএনপি। আজ রোববার স্মারকলিপি দিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে বের হওয়ার সময় পুলিশ দক্ষিণ মাগুরা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মুন্সী হাফিজুর রহমান বাবলু ও মহম্মদপুর উপজেলার বালিদিয়া ইউনিয়ন ছাত্রদল নেতা সজিবকে আটক করে।
বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে তাঁদের দুজনকে দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল গফফার। তিনি জানান, জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেওয়ার জন্য বিএনপির তিনজনের সমন্বয়ে একটি টিম যাওয়ার অনুমতি ছিল। কিন্তু তারা সেটা লঙ্ঘন করে অতিরিক্ত লোক নিয়ে গেছে। এজন্য দুজনকে আটক করা হয়েছিল। পরে জেলা বিএনপি নেতাদের মধ্যস্থতায় দুজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এদিকে বিএনপির দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ বেলা ১১টায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কবির মুরাদ ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ আলী করিমের নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা মাগুরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে স্মারকলিপি দেন। জেলা প্রশাসকের পক্ষে স্মারকলিপি গ্রহণ করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক খন্দকার আজিম আহমেদ।
স্মারকলিপিতে খালেদা জিয়াসহ নেতাদের বিরুদ্ধে দেওয়া রায়কে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবি করা হয়। তারা রায়ের তীব্র নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে সাজা বাতিল করে খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি জানান।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি দুপুরে পুরান ঢাকার বকশীবাজারে স্থাপিত বিশেষ জজ আদালতের বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় রায় ঘোষণা করেন। রায়ে বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছর এবং সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কাজী সলিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমানকে ১০ বছর করে কারাদণ্ডাদেশ এবং দুই কোটি ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
রায় ঘোষণার পর থেকেই পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। মামলার রায়ের কপি না পাওয়ায় জামিন আবেদন করতে পারেননি তিনি। তাঁর আইনজীবীরা বলছেন, কারাবাস বিলম্বিত করতে সরকার এখনো রায়ের কপি দেয়নি।
ওই রায়ের প্রতিবাদে বিএনপি গত ৯ ফেব্রুয়ারি ঢাকাসহ দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচি, ১০ ফেব্রুয়ারি প্রতিবাদ সমাবেশ, ১২ ফেব্রুয়ারি মানববন্ধন, ১৩ ফেব্রুয়ারি অবস্থান কর্মসূচি ও ১৪ ফেব্রুয়ারি অনশন কর্মসূচি পালন করে। গতকাল শনিবার গণস্বাক্ষর ও আজ রোববার সারা দেশের জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচি পালন করে বিএনপি।