তিস্তায় পানির ঢল
উজানে ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে ফুলে-ফেঁপে উঠেছে তিস্তা নদী। রোববার বিকেল থেকে নীলফামারীতে তিস্তা নদীতে নেমেছে উজানের ঢল।
সন্ধ্যা ৬টায় বাংলাদেশ অংশের ডালিয়া তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার (৫২ দশমিক ৪০) ১৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সময়ের সঙ্গে তা বেড়েই চলেছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে রাখা হয়েছে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সর্তকীকরণ কেন্দ্র সূত্র জানায়, শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ভারতের দো-মোহনী পয়েন্ট থেকে রোববার সন্ধ্যা ৬টায় তিস্তার পানি সেখানকার বিপৎসীমার (৮৫ দশমিক ৯৫) ৭ সেন্টিমিটার নিচে নেমে এলেও দুপুর ১২টায় ১৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে শুরু করে। পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে তিস্তা অববাহিকার নদীর ডান ও বাম তীর এলাকার অভ্যন্তরের গ্রাম ও চরাঞ্চলের বাসিন্দাদের কাছে সতর্কতা সংকেত পাঠানো হয়েছে।
সূত্রমতে, বাংলাদেশের তিস্তা ব্যারাজের উজানে ভারতের দো-মোহনী থেকে মেখলিগঞ্জ জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত তিস্তা নদীর অসংরক্ষিত এলাকায় ভারত কর্তৃপক্ষ রেড অ্যালার্ট এবং তিস্তার সাথে সংযুক্ত জলঢাকা নদীতে হলুদ সংকেত জারি করেছে।
অপরদিকে ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের তিস্তা অববাহিকার ২৫টি চর ও গ্রাম তিস্তার বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। সেসব এলাকার জনপ্রতিনিধিরা জানান, উজানের ঢলে তিস্তার বন্যায় প্লাবিত গ্রামের ১০ হাজার পরিবারের লোকজন তিস্তার বাঁধসহ বিভিন্ন উঁচুস্থানে আশ্রয় নিয়েছে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা জানান, গতকাল শনিবার সকাল ৬টায় তিস্তার পানি ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। যা ২৪ ঘণ্টা পর রোববার সকাল ৬টায় বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার নিচে নেমে আসে। আবার ১২ ঘণ্টার ব্যবধানে উজানের ঢলে পুনরায় তিস্তা রোববার সন্ধ্যায় বিপৎসীমার ১৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকে। কর্মকর্তাদের আশঙ্কা উজানের যে ঢল আসছে তা রাতে বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এদিকে উত্তরাঞ্চলের নীলফামারী সহ রংপুর বিভাগের আট জেলায় শনিবার রাত থেকে মাঝারি থেকে ভারি বর্ষণ শুরু হয়ে তা অব্যাহত ছিল রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত। দিনব্যাপী একটানা বর্ষণে রাস্তাঘাট ফসলি জমিসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।