মুনাফার লোভ ও বিচারহীনতায় বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনা
সড়ক পরিবহন ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণকারীদের বেশি মুনাফার লোভ ও বিচারহীনতার কারণেই দেশে সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা বাড়ছে বলে মনে করছেন দেশের বিশিষ্টজনেরা। সড়ক দুর্ঘটনা কমিয়ে আনতে জবাবদিহিতা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠাকেই তারা গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন।
গত ২১ মে বাসের ধাক্কা ও ট্রাকচাপায় নিহত পরিবেশকর্মী উত্তম দেবনাথের মৃত্যু হয়। তাঁর বিচারের দাবিতে আজ শনিবার সকালে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনের সড়কে ২৪টি পরিবেশ সংগঠনের উদ্যোগে এক নাগরিক সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
নাগরিক সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন। তারা অভিযোগ করে বলেন, সংশ্লিষ্টদের দায়সারা উদ্যোগ, অবহেলা ও সড়ক পরিবহন ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণকারীদের বেশি মুনাফার চেষ্টা সড়ক দুর্ঘটনার মূল কারণ।
সমাবেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও মানবাধিকারকর্মী অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল বলেন, ‘সমস্ত সমাজ ব্যবস্থার মাঝে যে অনাচার জুটেছে, যেই জবাবদিহিতার অভাব ঢুকেছে, যেই সুশাসনের অভাব ঢুকেছে, তার খেসারত দিচ্ছি আমরা সবাই মিলে। যারা দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছে, তাদেরই মূল দায়িত্ব দেখা যাতে একটা জাতি এই অবস্থার দিকে ধাবিত না হয়। এবং একই সঙ্গে আমি বলব, সচেতন নাগরিক হিসেবে আমাদেরও দায়-দায়িত্ব আছে সবার কাছে এই সচেতনতার কথা তুলে ধরার।’
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, ‘চেষ্টা করছি, কথা বলছি। কিন্তু আমাদের এই কণ্ঠটা কোথায় কিভাবে কার কাছে পৌছানো যায়, জানি না। বিচারহীনতার সংস্কৃতি কি আমাদেরকে জেকে বসবে? আমরা কি বিচার পাব না?’
সমাবেশে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা বলেন, ‘দায়িত্বগুলো আমার মনে হয় একক কোনো সংস্থা, একক কোনো ব্যক্তির ওপরে ছেড়ে দিলে আমার মনে হয় হবে না। এই সচেতনতা আমাদের প্রত্যেকের। প্রত্যেকেরই দায়িত্ব গ্রহণ করা প্রয়োজন।’
উত্তম দেবনাথের মৃত্যুর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের অবিলম্বে আইনের আওতায় এনে বিচার এবং তাঁর পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণের দাবি জানান সমাবেশে উপস্থিত বক্তারা। এছাড়া মোটরযান অধ্যাদেশ ১৯৮৩ এর সংশোধনী, পরিবহন মালিকদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা, উল্টোপথে গাড়ি চালানো বন্ধসহ ১৬টি দাবি এই নাগরিক সমাবেশ তুলে ধরা হয়।
সিআইপিআরবি এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দেওয়া তথ্যমতে, বাংলাদেশে প্রতি বছর সড়ক দুর্ঘটনায় ২৩ হাজারেরও বেশি মানুষ মারা যায়। আর প্রতিদিন মারা যায় ৬৪ জন যার মধ্যে ১৪ জনই শিশু। এছাড়াও সড়ক দুর্ঘটনায় পঙ্গুত্ব বরণ করে ৮০ হাজারেরও বেশি মানুষ।