গায়ক আসিফের জামিন আবেদন প্রত্যাহার

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) আইনে দায়ের করা মামলায় কারাগারে থাকা কণ্ঠশিল্পী আসিফ আকবরের জামিন আবেদন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন তাঁর আইনজীবীরা।
আজ রোববার সকাল ১১টার দিকে আসিফ আকবরের পক্ষে তাঁর আইনজীবী নুসরাত জাহান এ জামিনের আবেদন করেন। পরবর্তী সময়ে তাঁর আইনজীবী এ আদালতে জামিনের শুনানি করবেন না বলে আদালতকে জানালে আদালত সেই জামিনের আবেদন ফিরিয়ে দেন।
আইনজীবী নুসরাত জাহার সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজ আসিফের পক্ষে জামিনের আবেদন করা হয়। কিন্তু আমরা এ আদালতে জামিন শুনানি করতে ইচ্ছুক নয় বিধায় জামিনের আবেদন ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আদালতকে অনুরোধ করি। সে আবেদন মোতাবেক বিচারক জামিনের আবেদন ফিরিয়ে দেন।’
নুসরাত বলেন, ‘আগামীকাল সোমবার আমরা আবার অন্য আদালতে জামিনের আবেদন করব।’ তবে প্রতিদিন আদালত পরিবর্তন হয় বলে নির্দিষ্ট করে বিচারকের নাম বলা যাচ্ছে না বলে জানান তিনি।
আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা তাহেরা বানু এনটিভি অনলাইনকে বলেন, আজ আসিফের পক্ষে বিশেষ জামিনের আবেদন করা হয়েছিল। সেই আবেদন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা শুনানি করতে ইচ্ছুক নয় বলে আদালতকে অনুরোধ করলে আদালত আবেদন ফিরিয়ে দেন।
এর আগে গত ৬ জুন আসিফ আকবরকে ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম কেশব রায় চৌধুরীর আদালতে হাজির করা হয়। তখন পুলিশ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে। অন্যদিকে রিমান্ড বাতিল চেয়ে শিল্পীর জামিন আবেদন করেন তাঁর আইনজীবী। শুনানি শেষে আদালত আসিফ আকবরকে পাঁচ দিনের রিমান্ড নেওয়ার আবেদন নামঞ্জুর করে দেন। পরে জামিন নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠান আদালত।
এর আগে গত ৫ জুন দিবাগত রাত দেড়টার দিকে শিল্পী ও সুরকার শফিক তুহিনের দায়ের করা মামলায় আসিফ আকবরকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। তাঁর বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়। মামলায় আসিফ আকবর ছাড়া আরো চার-পাঁচজন অজ্ঞাত আসামি রয়েছে।
গত ৪ জুন সন্ধ্যায় দায়ের করা এ মামলার এজাহারে শফিক তুহিন অভিযোগ করেন, গত ১ জুন রাত ৯টার দিকে চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের সার্চলাইট নামে অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের মাধ্যমে তিনি জানতে পারেন, আসিফ আকবর অনুমতি ছাড়াই তাঁর সংগীতকর্মসহ অন্যান্য গীতিকার, সুরকার ও শিল্পীর ৬১৭টি গান সবার অজান্তে বিক্রি করেন।
অভিযোগে আরো বলা হয়, আসিফ আকবর আর্ব এন্টারটেইনমেন্টের চেয়ারম্যান হিসেবে বিভিন্ন মাধ্যমে গানগুলো ডিজিটাল রূপান্তরের মাধ্যমে ট্রু-টিউন, ওয়াপ-২, রিংটোন, পিআরবিটি, ফুলট্রেক, ওয়াল পেপার, অ্যানিমেশন, থ্রি-জি কন্টেন্ট ইত্যাদি হিসেবে বাণিজ্যিক ব্যবহার করে অসাধুভাবে ও প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল অর্থ উপার্জন করেছেন।
পরে ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে শফিক তুহিন গত ২ জুন রাত ২টা ২২ মিনিটে তাঁর ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে অনুমোদন ছাড়া গান বিক্রির এ ঘটনা উল্লেখ করে একটি পোস্ট দেন। ওই পোস্টের নিচে আসিফ আকবর নিজের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে অশালীন মন্তব্য করেন এবং হুমকি দেন।
মামলার এজাহারে আরো উল্লেখ করা হয়, পরের দিন রাত ৯টা ৫৯ মিনিটে আসিফ আকবর তাঁর প্রায় ৩২ লাখ লাইকার সমৃদ্ধ ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে লাইভে আসেন। ৫৪ মিনিট ৩৪ সেকেন্ড লাইভ ভিডিওর ২২ মিনিট থেকে তাঁর বিরুদ্ধে অবমাননাকর, অশালীন ও মিথ্যা-বানোয়াট বক্তব্য দেন।
ভিডিওতে আসিফ আকবর শফিক তুহিনকে শায়েস্তা করবেন—এ কথা বলার পাশাপাশি ভক্তদের উদ্দেশে বলেন, তাঁকে যেখানেই পাবেন, সেখানেই প্রতিহত করবেন। এই নির্দেশনা পেয়ে আসিফ আকবরের ভক্তরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁকে হত্যার হুমকি দেয়।
মামলায় আরো বলা হয়, আসিফ আকবরের এই বক্তব্য লাখ লাখ মানুষ দেখেছে। তিনি উসকানি দিয়েছেন। এতে তাঁর (শফিক তুহিন) মানহানি হয়েছে।