কুষ্টিয়ায় আদালত প্রাঙ্গণে মাহমুদুর রহমানের ওপর হামলা
কুষ্টিয়ায় ‘দৈনিক আমার দেশ’ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের ওপর হামলা হয়েছে। মানহানির মামলায় জামিন নিয়ে বের হওয়ার পর আদালত প্রাঙ্গণেই তাঁর গাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করা হয়। ওই সময় লাঠি ও ইটপাটকেলের আঘাতে আহত হন মাহমুদুর রহমান।
আজ রোববার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরে কয়েকজন আইনজীবীর সহযোগিতায় মাহমুদুর রহমান গাড়ি থেকে বের হন। বিকাল ৫টার দিকে আদালত প্রাঙ্গণ থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে মাহমুদুর রহমান ও তাঁর সহযোগীরা ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন।
আজ বেলা সাড়ে ১১টায় ঢাকা থেকে কুষ্টিয়া গিয়ে আদালতে মানহানির মামলায় জামিন আবেদন করেন মাহমুদুর রহমান। জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিমের আদালতের বিচারক শুনানি শেষে ১০ হাজার টাকার মুচলেকায় দুপুর ১২ টার দিকে তাঁর জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিন শেষে আদালত থেকে বের হওয়ার সময় হামলাকারীরা ঘিরে ধরার চেষ্টা করলে মাহমুদুর রহমান হামলার আশঙ্কায় আদালত ভবনেই অবস্থান নেন। ওই সময় ওই ভবনের সব গেটে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে হামলাকারীরা।
বেশ কয়েক ঘণ্টা আদালত ভবনে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন মাহমুদুর রহমান। ওই সময় তাঁর সঙ্গে কুষ্টিয়া জেলা বিএনপি সভাপতি সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমীসহ কয়েকজন আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন। এক পর্যায়ে আদালতের এজলাসে আশ্রয় নেন মাহমুদুর রহমান। দীর্ঘ সময় একই পরিবেশ বিরাজ করায় তিনি আদালতকে বিষয়টি জানান এবং লিখিতভাবে পুলিশি নিরাপত্তার জন্য আবেদন করেন। দীর্ঘ ৪ ঘন্টা ১৫ মিনিট পর মাহমুদুর রহমান বের হয়ে একটি প্রাইভেটকার যোগে রওনা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হামলা শুরু হয়।
হামলাকারীরা প্রথমে গাড়িটির সব কাঁচ ভেঙে ফেলে। পরে ভাঙা কাঁচের ভেতর দিয়ে লাঠি ও ইট পাটকেল দিয়ে আঘাত করা হয়। ওই আঘাতে আহত হন মাহমুদুর রহমান।
গাড়ি ভাঙচুরের সময় হামলাকারীরা ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিচ্ছিল। ওই সময় হামলাকারীরা বঙ্গবন্ধুকে কটূক্তি করার জন্য মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান ও গালিগালাজ করতে থাকে। ঘটনার সময় পুরো আদালত প্রাঙ্গণে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
হামলার পর পুলিশের উদ্দেশ্য মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘পুলিশ পাহারা দিয়ে আমার ওপর হামলা করালো। মরে যাব তবুও আমার সংগ্রাম চলবে।’
এ ব্যাপারে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির উদ্দিন আহমেদ কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। ঘটনার পরে তাঁর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি কোনো মন্তব্য করতে চাননি।
২০১৭ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তাঁর নাতনি টিউলিপকে নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগে কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ইয়াসিন আরাফাত তুষার কুষ্টিয়ায় মানহানির মামলা দায়ের করেন।
একই দিন সাংবাদিক ইউনিয়ন কুষ্টিয়ার সদস্যরা মাহমুদুর রহমানকে কালো পতাকা প্রদর্শন করেন। সাংবাদিক ইউনিয়ন কুষ্টিয়ার সভাপতি রাশেদুল ইসলাম বিপ্লবের নেতৃত্বে সাংবাদিকরাও মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে কালো পতাকা নিয়ে মিছিল করেন।
এদিকে মাহমুদুর রহমানের ওপর হামলার প্রতিবাদে নিন্দা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) একাংশ। বিএফইউজের (একাংশ) সভাপতি রুহুল আমীন গাজী, মহাসচিব এম আবদুল্লাহ, ডিইউজের (একাংশ) সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মো. শহীদুল ইসলাম এক বিবৃতিতে হামলাকারীদের শাস্তি দাবি করেন।