সিলেটে বিএনপির আরিফের জয়
সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে বিএনপিদলীয় মেয়র পদপ্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী টানা দ্বিতীয়বারের মতো নির্বাচিত হয়েছেন। ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে তিনি পেয়েছেন ৯২ হাজার ৫৮৮ ভোট। অন্যদিকে আরিফের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের বদর উদ্দিন আহমেদ কামরান নৌকা প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৮৬ হাজার ৩৯২ ভোট।
সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আলীমুজ্জামান আজ শনিবার সন্ধ্যায় এই ফলাফল ঘোষণা করেন। ফলাফল ঘোষণার সময় আরিফুল ইসলামকে ফোন করে অভিনন্দন জানান বদর উদ্দিন আহমেদ কামরান।
অন্য দিকে নির্বাচনে টেবিল ঘড়ি প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী এহসানুল মাহবুব জুবায়ের পেয়েছেন ১১ হাজার ভোট। হাত পাখা প্রতীকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ডা. মো. মোয়াজ্জেম হোসেন খান পেয়েছেন ২ হাজার ২০৮ ভোট। বাসদের প্রার্থী মো. আবু জাফর মই প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৯০৯ ভোট। এ ছাড়া স্বতন্ত্রপ্রার্থী মো. এহছানুল হক তাহের হরিণ মার্কা নিয়ে ৩১৪ ভোট এবং মো. বদরুজ্জামান সেলিম বাস প্রতীকে পেয়েছেন ৫৯২ ভোট।
আজ শনিবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত সিটি করপোরেশনের ১৬টি কেন্দ্রের পুনরায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়। এর মধ্যে মেয়র পদে ভাগ্য নির্ধারণের জন্য দুটি কেন্দ্রে পুনরায় ভোট নেওয়া হয়।
গত ৩০ জুলাই নির্বাচনের দিন অনিয়মের কারণে নগরীর গাজী বুরহানউদ্দিন গরম দেওয়ান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও হবিনন্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করেছিল নির্বাচন কমিশন। এ দুই কেন্দ্র ছাড়া ভোটের ফলাফল সমান হয়ে যাওয়ায় সংরক্ষিত ৭ নম্বর (১৯, ২০ ও ২১) ওয়ার্ডের ১৪টি কেন্দ্রে সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদেও পুনরায় ভোট নেওয়া হয় আজ।
ওই দুই কেন্দ্রে ৪ হাজার ৭৮৭ ভোটের মধ্যে বিএনপির প্রার্থী আরিফুল হক পেয়েছেন ২ হাজার ৯২ ভোট। আর বদরউদ্দিন আহমদ কামরান পেয়েছেন ৫২২ ভোট।
গত ৩০ জুলাইয়ের নির্বাচনে ১৩৪ কেন্দ্রের মধ্যে ১৩২ কেন্দ্রের ভোট গণনায় বিএনপির মেয়র প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরীর প্রাপ্ত ভোট ছিল ৯০ হাজার ৪৯৬। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরান পান ৮৫ হাজার ৮৭০ ভোট। ফলে বিএনপির মেয়র প্রার্থী আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীর চেয়ে চার হাজার ৬২৬ ভোটে এগিয়ে ছিলেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আলীমুজ্জামান বলেন, ভোট সুষ্ঠু করতে নিরাপত্তা জোরদার করার পাশাপাশি সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়। ভোটারদের নিরাপত্তায় পুলিশ, র্যাব ও আনসার সদস্যরা মাঠে রয়েছেন। পাশাপাশি দুই প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়। এ ছাড়া নির্বাহী হাকিমের নেতেৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত ছিল ভোটের মাঠে।
এদিকে বিএনপির প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী গত বৃহস্পতিবার ঢাকায় প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে দেখা করে দুই কেন্দ্রের পুনরায় ভোটে কোনোভাবেই যেন মৃত ও প্রবাসীদের ভোট না পড়ে সে বিষয়ে নজর দেওয়ার অনুরোধ জানান। সিলেটে যে সব ভোটার মারা গেছেন এবং প্রবাসে আছেন তাদের নামের একটি তালিকাও তিনি কমিশনে জমা দেন।
আরিফুল হকের দেওয়া তথ্য মতে, সিসিকের স্থগিত হওয়া গাজী বুরহান উদ্দিন গরম দেওয়ান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দুই ২২১ ভোটারের মধ্যে মারা গেছেন ৮০ জন ও বিদেশে আছেন ৮০ জন। অন্যদিকে স্থগিত হওয়া হবিনন্দী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের দুই ৫৬৬ ভোটারের মধ্যে মারা গেছেন ৮০ জন ও প্রবাসে আছেন ৮০ জন এবং ওয়ার্ড ছেড়ে চলে গেছেন আরো ২৫-৩০ জন।