জ্বালানি তেলে ফিরেছে কিছুটা স্বস্তি
অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর গত ৩১ আগস্ট জ্বালানি তেলের দাম কমানোর উদ্যোগ নেয়। এরমধ্যে ছিল কেরোসিন, পেট্রোল ও অকটেন। বিশ্ব বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দেশে জ্বালানি তেলের নতুন দাম নির্ধারণ করে অন্তর্বর্তী সরকার।
জ্বালানি তেলের মধ্যে পেট্রোল ও অকটেনের দাম লিটার প্রতি ছয় টাকা কমানো হয়। অন্যদিকে ডিজেলের দাম লিটার প্রতি কমানো হয় এক টাকা ২৫ পয়সা। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, অকটেনের দাম ১৩১ টাকা থেকে কমে ১২৫ টাকা, পেট্রোলের দাম ১২৭ টাকা থেকে কমে ১২১ টাকা এবং ডিজেলের দাম ১০৬ টাকা ৭৫ পয়সা থেকে কমে ১০৫ টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারিত হয়। এরপর সরকার পুনরায় গত ৩১ অক্টোবর ডিজেল-কেরোসিনের দাম ৫০ পয়সা করে কমায়। বলা হয়, ডিজেল ও কেরোসিনের প্রতি লিটারের খুচরা মূল্য ১০৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর আগে দাম ছিল ১০৫ টাকা ৫০ পয়সা।
এর আগে গত ২২ আগস্ট জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৪-এর খসড়ার নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সেই অধ্যাদেশ অনুযায়ী, গণশুনানি ছাড়া সরকার বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম নির্ধারণ করবে না।
বিদ্যুৎ উৎপাদন, গ্যাস ও পেট্রোলিয়ামজাত পদার্থের ব্যবস্থাপনা, ট্যারিফ নির্ধারণ, ভোক্তার স্বার্থ সংরক্ষণ ও প্রতিযোগিতামূলক বাজার সৃষ্টির লক্ষ্যে ২০০৩ সালে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইন (২০০৩ সালের ১৩ নম্বর আইন) প্রণীত হয়। পরবর্তী সময়ে ২০০৫, ২০১০, ২০২০ ও ২০২৩ সালে আইনটি সংশোধন করা হয়। ইতোপূর্বে আইনটি সংশোধন করে এর ৩৪ ধারার সঙ্গে ৩৪(ক) ধারা সংযোজন করা হয়। সেটি হলো, '৩৪ক। ট্যারিফ নির্ধারণ, পুনঃনির্ধারণ বা সমন্বয়ে সরকারের ক্ষমতা। এই আইনের অন্যান্য বিধানে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, বিশেষ ক্ষেত্রে সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, ভর্তুকি সমন্বয়ের লক্ষ্যে, জনস্বার্থে, কৃষি, শিল্প, সার, ব্যবসা-বাণিজ্য ও গৃহস্থালি কাজের চাহিদা অনুযায়ী এনার্জির নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করিবার লক্ষ্যে উহাদের উৎপাদন বৃদ্ধি, সঞ্চালন, পরিবহণ ও বিপণনের নিমিত্ত দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের সুবিধার্থে বিদ্যুৎ উৎপাদন, এনার্জি সঞ্চালন, মজুদকরণ, বিপণন, সরবরাহ, বিতরণ এবং ভোক্তা পর্যায়ে ট্যারিফ নির্ধারণ, পুনঃনির্ধারণ বা সমন্বয় করিতে পারিবে।'
বর্তমান প্রেক্ষাপটে বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং গ্যাস সম্পদ ও পেট্রোলিয়ামজাত পদার্থের ট্যারিফ বা মূল্য নির্ধারণে গণশুনানির মাধ্যমে জনগণের অধিক সম্পৃক্ততা, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, সুশাসন, জনপ্রত্যাশা ও ভোক্তার স্বার্থ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইন, ২০০৩ এর উপরোক্ত ৩৪ক ধারা বিলুপ্ত করার লক্ষ্যে অধ্যাদেশ জারির বিষয়ে উপদেষ্টা পরিষদ-বৈঠকে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এরপর থেকে কয়েক দফায় জ্বালানি তেলের দাম কমেছে।