বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম বাড়বে, তবে সহনীয় মাত্রায়
প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি, বিদ্যুৎ ও খনিজসম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেছেন, বিদ্যুতের উৎপাদন ও জ্বালানি আমদানির খরচ বাড়ছে। এ কারণে মূল্য সমন্বয় করার জন্য বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম বাড়বে। তবে তা ধীরে ধীরে এবং জনগণের জন্য সহনীয় মাত্রায়।
আজ শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ফোরাম ফর এনার্জি রিপোর্টার্স আয়োজিত ‘নেট মিটারিং সিস্টেম’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন জ্বালানি উপদেষ্টা।
উপদেষ্টা বলেন, ২০৪১ সালে বাংলাদেশে ৪০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দরকার হবে। আর সে লক্ষ্য কাজ করছে সরকার। নতুন যেসব পাওয়ার প্রজেক্ট হবে তার ৩৫ শতাংশ ফুয়েল এবং ৩৫ শতাংশ হবে গ্যাসভিত্তিক। তবে, সরকার সোলার এনার্জির দিকে বেশি নজর দিচ্ছে। যেসব খালি জায়গা আছে বিশেষ করে কৃষি জমি এবং এয়ারপোর্ট এলাকায় সোলার এনার্জি বসানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
এদিকে, এলপিজির ব্যবহার বাড়ানো এবং এর দাম নির্ধারণের বিষয়টিও গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে বলে জানান জ্বালানি উপদেষ্টা।
ফোরাম ফর এনার্জি রিপোর্টার্সের সভাপতি অরুণ কর্মকারের সভাপতিত্বে সেমিনারে বক্তব্য দেন পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসেনসহ জ্বালানি ও বিদ্যুৎ বিশেষজ্ঞরা। এতে বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা তাঁদের সুপারিশ ও অভিমত তুলে ধরেন।
জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের জন্য উন্নত সরবরাহ লাইন স্থাপন ও বিদ্যুৎ উৎপাদনে আমাদের খরচ বাড়ছে। এ ছাড়া এলএনজি আমদানি শুরু হয়েছে। এতেও জ্বালানি খরচ বাড়ছে। এ ব্যয় সমন্বয়ের জন্য আমাদেরকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম বাড়াতে হবে। তবে ধীরে ধীরে জনগণের জন্য সহনীয় মাত্রায় বাড়ানো হবে।
তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে উন্নত রাষ্ট্রের পর্যায়ে নিতে হলে আমাদের আরো ৪০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে হবে। এর জন্য আমাদের বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি ভারত ও নেপাল থেকে আমদানি করতে হচ্ছে। তবে এখন থেকেই আমাদের সোলার এনার্জির প্রতি আরো উদ্যোগী হতে হবে।
নেট মিটারিং সিস্টেমের বিবরণ দিয়ে জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, বিশ্বের অনেক দেশেই এ পদ্ধতি রয়েছে। আমাদের দেশের উন্মুক্ত স্থানে এবং বাড়ি বা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের আঙিনায় সৌর প্যানেল স্থাপন করে দিনের বেলায় বিদ্যুৎ উৎপাদন করে তা জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা সম্ভব। এ প্রকল্প আমরা হাতে নিয়েছি। একজন উদ্যোক্তা যতটা উৎপাদন করে জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করবেন মাস শেষে তাঁর ব্যবহৃত বিদ্যুতের পরিমাণের সঙ্গে সমন্বয় করা হবে।
পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসেন বলেন, গ্রাহক পর্যায়ে সৌর প্যানেল থেকে নেট মিটারিং পদ্ধতিতে উৎপাদিত বিদ্যুৎ কিনে তা জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ পদ্ধতিতে গ্রাহকের বাড়ি, অফিস আঙিনায় বা ছাদে সৌর প্যানেল স্থাপন করা হবে। তা থেকে দিনের বেলায় ব্যবহারের অতিরিক্ত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হবে। মাস শেষে গ্রাহকের বিদ্যুতের বিলের সঙ্গে তা সমন্বয় হবে। গ্রাহক সরাসরি কোনো অর্থ হাতে পাবে না। তবে সব সময় তা ব্যবহৃত বিদ্যুতের সঙ্গে সমন্বয় করা হবে।