সংলাপ আর আন্দোলন একসঙ্গে চলবে : মওদুদ
সরকারের সঙ্গে সাত দফা দাবি নিয়ে সংলাপ, দাবি আদায়ে রাজপথে আন্দোলন, নির্বাচনের প্রস্তুতি সব একসঙ্গে চলবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ।
আজ বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপি আয়োজিত মানববন্ধনে মওদুদ আহমদ এসব কথা বলেন।
সংলাপে সাত দফার আলোকেই আলোচনা হবে মন্তব্য করে সাবেক আইনমন্ত্রী বলেন, ‘সংলাপ-আন্দোলন-নির্বাচন একসঙ্গে চলবে। যত দিন পর্যন্ত দাবি আদায় না হবে, তত দিন পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।’
ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, ‘এত দিন যাবৎ যে কৌশল নিয়ে আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করেছি, সেটি ফলপ্রসূ হয়েছে। সরকার সংলাপ করতে সম্মত হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতাসীন দলের মন্ত্রীরা সংলাপে নাকচ থাকলেও এখন তারা দেশের মানুষের মনের কথা উপলব্ধি করায় তাদের ধন্যবাদ জানাই।’
এর আগে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় সাজা বাড়ানো ও চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় সাজার প্রতিবাদে ও মুক্তির দাবিতে দলটির পূর্বঘোষিত মানববন্ধন শুরু হয়। বুধবার সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন শুরু হয়।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, বরকত উল্লাহ বুলু, মো. শাহজাহান, রুহুল আলম চৌধুরী, আবদুল আউয়াল মিন্টু, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, বিশেষ সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপি, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া, জেএসডি ও নাগরিক ঐক্য নিয়ে গত ১৩ অক্টোবর জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আত্মপ্রকাশ ঘটে। সেদিন জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে করে এই ঘোষণা দেওয়া হয়। নতুন জোটের আহ্বায়ক করা হয় গণফোরামের সভাপতি ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. কামাল হোসেনকে। নতুন জোটের পক্ষে সাত দফা দাবি ও ১১ দফা লক্ষ্য ঘোষণা করেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না।
এই সাত দফা দাবির মধ্যে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে সরকারের পদত্যাগ, জাতীয় সংসদ বাতিল, সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে নির্বাচনকালীন নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকার গঠন এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দির মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার নিশ্চিত করার পাশাপাশি গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন ও নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার না করার নিশ্চয়তা প্রদানের কথাও বলা হয়েছে।
এসব দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের সঙ্গে সংলাপের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছিলেন ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন। তাঁর এই আহ্বানে সাড়া দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সংলাপের আমন্ত্রণ জানিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ও গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেনকে চিঠি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। এই পরিপ্রেক্ষিতে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গণভবনে এই সংলাপ হবে। ঐক্যফ্রন্ট এরই মধ্যে জানিয়েছে, তাদের ১৬ জনের একটি প্রতিনিধিদল সংলাপে অংশ নেবে। এই সংলাপ নিয়ে রাজনৈতিক মহলে আলোচনা তুঙ্গে রয়েছে।