যে ৭০ পুলিশ কর্মকর্তার প্রত্যাহার চায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট
আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠান করতে সব দল ও প্রার্থীর জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির জন্য ৭০ জন পুলিশ কর্মকর্তাকে অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বিএনপি।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন কমিশনে গিয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের কাছে একটি চিঠি দেয় তারা। বিএনপির মহাসচিব ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত চিঠিটি পৌঁছে দেন দলের যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা বরাবর পাঠানো চিঠিতে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘সালাম নিবেন। আপনাকে জানাচ্ছি যে নির্বাচন কমিশনের সাথে রাজনৈতিক সংলাপে এবং পরবর্তীতে বিভিন্ন সময়ে আমরা মাঠ প্রশাসনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির জন্য লিখিত ও মৌখিকভাবে আহ্বান জানিয়েছি। প্রধানমন্ত্রীর সাথে সংলাপেও তিনি সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এমনকি আপনিও ৮ নভেম্বর তফসিল ঘোষণাকালে জাতির উদ্দেশে প্রদত্ত ভাষণে সকল দল ও প্রার্থীর জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন।
কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে দেশবাসী লক্ষ করেছে যে তফসিল ঘোষণার পর ১০ থেকে ১২ দিন সময় অতিবাহিত হলেও আপনাদের এ সকল প্রতিশ্রুতির দৃশ্যমান কোনো কার্যক্রম পরিলক্ষিত হচ্ছে না। উপরন্তু সরকারের সাজানো পুলিশ প্রশাসনে অতি দলবাজ ও চিহ্নিত বিতর্কিত কর্মকর্তা নির্বাচনী মাঠ দাবরিয়ে বেড়াচ্ছে। অথচ কমিশনে সকল বিতর্কিত কর্মকর্তাদের প্রত্যাহারে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না।
এ অবস্থায় পুলিশ প্রশাসনের নিম্নলিখিত বিতর্কিত কর্মকর্তাদের অবিলম্বে প্রত্যাহার পূর্বক নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সকল প্রকার দায়িত্ব থেকে বিরত রাখার জোর দাবি জানাচ্ছি।’
১. পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন) জামালপুরের মো. মোখলেসুর রহমান (বিসিএস সপ্তম ব্যাচ), ২. র্যাবের মহাপরিচালক ও অতিরিক্ত আইজিপি গোপালগঞ্জের বেনজীর আহম্মেদ (বিসিএস সপ্তম ব্যাচ), ৩. ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার ফরিদপুরের আছাদুজ্জামান মিয়া (বিসিএস সপ্তম ব্যাচ), ৪. অতিরিক্ত আইজিপি (টেলিকম) পাবনার মো. ইকবাল বাহার (বিসিএস অষ্টম ব্যাচ), ৫. নৌপুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) খুলনার শেখ মো. মারুফ হাসান (বিসিএস অষ্টম ব্যাচ), ৬. সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি চাঁদপুরের মো. কামরুল আহসান (বিসিএস ১২তম ব্যাচ), ৭. চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি টাঙ্গাইলের খন্দকার গোলাম ফারুক (বিসিএস ১২তম ব্যাচ), ৮. খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি গোপালগঞ্জের মো. দিদার আহম্মেদ (বিসিএস ১২তম ব্যাচ), ৯. রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি গোপালগঞ্জের এম খুরশীদ হোসেন (বিসিএস ১২তম ব্যাচ), ১০. খুলনা মহানগর পুলিশের (কেএমপি) কমিশনার ও ডিআইজি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার হুমায়ুন কবির (বিসিএস ১২তম ব্যাচ),
১১. ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের অতিরিক্ত কমিশনার জামালপুরের মো. মনিরুল ইসলাম (বিএসএস ১৫তম ব্যাচ), ১২. চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার ও ডিআইজি জামালপুরের মাহবুবুর রহমান (বিসিএস ১৫তম ব্যাচ), ১৩. ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার ও ডিআইজি মাগুরার মীর রেজাউল আলম (বিসিএস ১৫তম ব্যাচ), ১৪. ঢাকা সিটি এসবির ডিআইজি গোপালগঞ্জের মো. আলী মিয়া (বিসিএস ১৫তম ব্যাচ), ১৫. রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি মৌলভীবাজারের দেবদাস ভট্টাচার্য (বিসিএস ১৫তম ব্যাচ), ১৬. ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার ও ডিআইজি হবিগঞ্জের কৃষ্ণপদ রায় (বিসিএস ১৫তম ব্যাচ), ১৭. পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি (প্রশাসন) গোপালগঞ্জের হাবিবুর রহমান (বিসিএস ১৭তম ব্যাচ), ১৮. পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি (অপারেশন) কিশোরগঞ্জের আনোয়ার হোসেন (বিসিএস ১৭তম ব্যাচ), ১৯. রাজশাহী পুলিশ কমিশনার (আরএমপি) ও ডিআইজি গাজীপুরের হাফিজ আক্তার (বিসিএস ১৭তম ব্যাচ), ২০. পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি (ট্রেনিং) ও বরিশালের ড. খ মহিদ উদ্দিন (বিসিএস ১৭তম ব্যাচ), ২১. ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার ও ডিআইজি সুনামগঞ্জের আবদুল বাতেন (বিসিএস ১৭তম ব্যাচ), ২২. রংপুর মহানগরে র্যাব-৪ এর অধিনায়ক ও অতিরিক্ত ডিআইজি রাজবাড়ীর চৌধুরী মঞ্জুরুল কবির (বিসিএস ১৭তম ব্যাচ), ২৩. ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার ও অতিরিক্ত ডিআইজি নড়াইলের শেখ নাজমুল আলম (বিসিএস ১৭তম ব্যাচ), ২৪. খুলনা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি ময়মনসিংহের এ কে এম নাহিদুল ইসলাম (বিসিএস ১৭তম ব্যাচ), ২৫. পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত ডিআইজি যশোরের মো. মনিরুজ্জামান (বিসিএস ১৭তম ব্যাচ), ২৬. সিলেট রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি খুলনার জয়দেব কুমার ভদ্র (বিসিএস ১৮তম ব্যাচ), ২৭. ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মাদারীপুরের মো. আসাদুজ্জামান (বিসিএস ১৮তম ব্যাচ), ২৮. ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (ডিবি) কুমিল্লার মাহবুব আলম (বিসিএস ১৮তম ব্যাচ), ২৯. ঢাকা সিআইডির পুলিশ সুপার (এসপি) নড়াইলের মোল্যা নজরুল ইসলাম (বিসিএস ২০তম ব্যাচ), ৩০. সিলেটে ট্যুরিস্ট পুলিশের এসপি পাবনার আলতাফ হোসেন (বিসিএস ২০তম ব্যাচ), ৩১. ডিএমপির তেজগাঁও জোনের উপকমিশনার (ডিসি) কিশোরগঞ্জের বিপ্লব কুমার সরকার (বিসিএস ২০তম ব্যাচ), ৩২. ডিএমপির ডিসি কিশোরগঞ্জের হারুন অর রশিদ (বিসিএস ২০তম ব্যাচ), ৩৩. ডিএমপির রমনা জোনের ডিসি খুলনার মো. মারুফ হোসেন সরদার (বিসিএস ২১তম ব্যাচ), ৩৪. সিএমপির ডিসি খুলনার এস এম মেহেদী হাসান (বিসিএস ২২তম ব্যাচ),
৩৫. ডিএমপির ডিসি (ডিবি উত্তর) মাগুরার খন্দকার নুরুন নবী (বিসিএস ২২তম ব্যাচ), ৩৬. সিএমপির ডিসি সিরাজগঞ্জের মো. ফারুকুল হক (বিসিএস ২২তম ব্যাচ), ৩৭. ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের ডিসি নেত্রকোনার প্রলয় কুমার জোয়ার্দার (বিসিএস ২৪তম ব্যাচ), ৩৮. ডিএমপির ডিসি গোপালগঞ্জের এস এম মুরাদ আলী (বিসিএস ২৪তম ব্যাচ), ৩৯. ডিএমপির এডিসি গোপালগঞ্জের শিবলী নোমান।
৪০. ঢাকা বিভাগের ঢাকা জেলার এসপি নাটোরের লালপুরের শাহ মিজান শফি (বিসিএস ২০তম ব্যাচ), ৪১. নারায়ণগঞ্জের এসপি গোপালগঞ্জের মো. আনিসুর রহমান (বিসিএস ২০তম ব্যাচ), ৪২. মুন্সীগঞ্জের এসপি মাদারীপুরের মো. জায়েদুল আলম (বিসিএস ২২তম ব্যাচ), ৪৩. নরসিংদীর এসপি পটুয়াখালীর মিরাজ (বিসিএস ২০তম ব্যাচ), ৪৪. টাঙ্গাইলের এসপি সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার সঞ্জিত কুমার রায় (বিসিএস ২২তম ব্যাচ), ৪৫. মাদারীপুরের এসপি বাগেরহাটের চিতলমারীর সুব্রত কুমার হাওলাদার (বিসিএস ২১তম ব্যাচ)। ৪৬. ময়মনসিংহ বিভাগের ময়মনসিংহ জেলার এসপি বাগেরহাটের শাহ আবিদ হোসেন (বিসিএস ২০তম ব্যাচ), ৪৭. শেরপুরের এসপি ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার আশরাফুল আজিম (বিসিএস ২৪তম ব্যাচ),
৪৮. সিলেট বিভাগের সিলেট জেলার এসপি পটুয়াখালীর মো. মনিরুজ্জামান (বিসিএস ২০তম ব্যাচ),৪৯. বরিশাল বিভাগের বরিশাল জেলার এসপি পাবনার সুজানগর উপজেলার সাইফুল ইসলাম (বিসিএস ২০তম ব্যাচ), ৫০. ভোলার এসপি পটুয়াখালীর মোক্তার হোসেন (বিসিএস ২১তম ব্যাচ), ৫১. খুলনা বিভাগের খুলনার এসপি গোপালগঞ্জের এস এম শফিউল্লাহ (বিসিএস ২৪তম ব্যাচ), ৫২. সাতক্ষীরার এসপি ঝিনাইদহের মো. সাজ্জাদুর রহমান (বিসিএস ২১তম ব্যাচ), ৫৩. বাগেরহাটের এসপি লালমনিরহাটের পঙ্কজ চন্দ্র রায় (বিসিএস ২১তম ব্যাচ), ৫৪. যশোরের এসপি পটুয়াখালীর মঈনুল হক (বিসিএস ২০তম ব্যাচ), ৫৫. ঝিনাইদহের এসপি নড়াইলের হাসানুজ্জামান (বিসিএস ২২তম ব্যাচ), ৫৬. কুষ্টিয়ার এসপি বাগেরহাটের আরাফাত তানভীর (বিসিএস ২৪তম ব্যাচ), ৫৭. চট্টগ্রাম বিভাগের চট্টগ্রাম জেলার এসপি গোপালগঞ্জের নূরে আলম মিনা (বিসিএস ২০তম ব্যাচ), ৫৮. নোয়াখালীর এসপি ফরিদপুরের বোয়ালমারীর ইলিয়াস শরিফ (বিসিএস ২০তম ব্যাচ), ৫৯. ফেনীর এসপি পাবনার এসএম জাহাঙ্গীর আলম সরকার (বিসিএস ২২তম ব্যাচ),
৬০. কুমিল্লার এসপি চাঁপাইনবাবগঞ্জের সৈয়দ নুরুল ইসলাম (বিসিএস ২০তম ব্যাচ), ৬১. রংপুর বিভাগের রংপুর জেলার এসপি জামালপুরের মিজানুর রহমান (বিসিএস ২১তম ব্যাচ), ৬২. দিনাজপুরের এসপি ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার সৈয়দ আবু সায়েম (বিসিএস ২৪তম ব্যাচ), ৬৩. ঠাকুরগাঁওয়ের এসপি কুষ্টিয়ার মনিরুজ্জামান (বিসিএস ২০তম ব্যাচ), ৬৪. রাজশাহী বিভাগের রাজশাহী জেলার এসপি শেরপুরের মো. শহীদুল্লাহ (বিসিএস ২৪তম ব্যাচ), ৬৫. চাঁপাইনবাগঞ্জের এসপি গাজীপুরের মোজাহিদুল ইসলাম (বিসিএস ২০তম ব্যাচ), ৬৬. নওগাঁর এসপি পাবনার ইকবাল হোসেন (বিসিএস ১৮তম ব্যাচ), ৬৭. নাটোরের এসপি নেত্রকোনার সাইফুল্লাহ (বিসিএস ২০তম ব্যাচ), ৬৮. বগুড়ার এসপি নেত্রকোনার মদন উপজেলার আশরাফ আলী (বিসিএস ২৪তম ব্যাচ), ৬৯. সিরাজগঞ্জের এসপি লক্ষ্মীপুরের টুটুল চক্রবর্তী (বিসিএস ২০তম ব্যাচ), ৭০. পাবনার এসপি গোপালগঞ্জের রফিক ইসলাম (বিসিএস ২০তম ব্যাচ)।
চিঠির শেষে মির্জা ফখরুল লিখেন, ‘আমরা পুলিশের মাঠ প্রশাসনের অবশিষ্ট কর্মকর্তাদের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করছি এবং বিতর্কিত কর্মকর্তাদের পর্যায়ক্রমে প্রত্যাহারের দাবি জানাব। এতদ্ব্যতীত অবিলম্বে অন্যান্য সকল পুলিশ সুপার ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের বর্তমান কর্মস্থল জেলার বাইরে বদলির ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যও পুনরায় জোর দাবি জানাচ্ছি।’