অন্তঃসত্ত্বা ভারতীয় সেই নারীকে সন্তানসহ বিএসএফের কাছে হস্তান্তর
ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফের পুশইনের শিকার ভারতীয় ৬ নাগরিকের মধ্যে অবশেষে নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা সোনালি খাতুন ও তার সন্তানকে ভারতে পাঠানো হয়েছে।
আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) রাত ৮টার দিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ সীমান্ত দিয়ে বিজিবি তাদের বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করে। তবে বাকি চারজন হস্তান্তর হয়নি।
বিজিবি জানায়, সোনামসজিদ আইসিপিতে বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে পতাকা বৈঠক শেষে সোনালি খাতুন তার আট বছরের শিশু সন্তান সাব্বির শেখকে সুস্থ ও নিরাপদ অবস্থায় বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ সময় বিজিবির মহানন্দা ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল গোলাম কিবরিয়া উপস্থিত ছিলেন।
বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্নেল গোলাম কিবরিয়া বলেন, বিএসএফের এই অমানবিক পুশইন কর্মকাণ্ড আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ড এবং দ্বিপক্ষীয় সীমান্ত ব্যবস্থাপনা চুক্তির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এর ফলে দীর্ঘদিন ধরে সীমান্ত এলাকায় মানবিক সংকটের সৃষ্টি হয়েছে। অন্তঃসত্ত্বা নারী ও দুই শিশুকে পুশইন করায় সৃষ্ট মানবিক ঝুঁকি এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি নজরে রেখে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বিজিবি সদর দপ্তর কূটনৈতিক পর্যায়ে নিবিড় যোগাযোগ স্থাপন করে। উভয় দেশের সম্মতিতে ভারতীয় নাগরিকদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় আজ তাদের সসম্মানে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হলো।
বিজিবি অধিনায়ক আরও বলেন, মানবিক বিবেচনায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের আদালত গত ২ ডিসেম্বর তাদের স্থানীয়র জিম্মায় জামিন দেন এবং কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে দেশে ফেরত পাঠানোর নির্দেশনা দেন।
‘বাংলাদেশি’ তকমায় দুটি পরিবারের এই ৬ নাগরিক দিল্লিতে ইটভাটায় কাজ করার সময় গত ২৪ জুন পুলিশের হাতে আটকের পর বিএসএফ তাদের বাংলাদেশে পুশইন করে ২৬ জুন। কুড়িগ্রাম সীমান্ত দিয়ে পুশইন হওয়া এই ছয় ভারতীয় নাগরিক প্রথমে ঢাকা তারপর চাঁপাইনবাবগঞ্জে এসে অবস্থান করছিলেন। প্রায় দুই মাসেরও অধিক সময় চাঁপাইনবাবগঞ্জে অবস্থানের সময় গত ২০ আগস্ট পৌরসভার আলীনগর ভূতপুকুর এলাকা থেকে পুলিশ তাদের আটক করে। পুলিশ তাদের আটকের সময় সোনালি বেগম অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া শেষে পৌরসভার নয়াগোলা এলাকার ফারুক হোসেনের জিম্মায় পাঁচ হাজার টাকা বন্ডে আদালত তাদের জামিন দেন। অবশেষে ছয়জনের মধ্যে সোনালি ও তার সন্তানকে ভারতে ফেরত পাঠানো হলো। বাকি চারজনের ব্যাপারে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি।

শহীদুল হুদা অলক, চাঁপাইনবাবগঞ্জ