সরকারি মূল্যে সার নেই, তিন গুণ দামে বিক্রির অভিযোগ
চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে ডায়ামোনিয়াম ফসফেট (ডিএপি) সার বিক্রিতে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সারের কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে একটি সিন্ডিকেট ফায়দা লুটছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। সরকারি নির্ধারিত মূল্য থাকলেও কৃষকদের বেশি দামে কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে। উপজেলার জন্য পর্যাপ্ত বরাদ্দ থাকা সত্ত্বেও বিসিআইসি, বিএডিসি এবং খুচরা সার ব্যবসায়ীদের সমন্বয়ে তৈরি সিন্ডিকেট কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে অতিরিক্ত দামে সার বিক্রি করছে ডিলাররা।
ডিএপি সারের সরকারি মূল্য বস্তাপ্রতি ১ হাজার ৫০ টাকা। কিন্তু ন্যায্যমূল্যে তা পাওয়া যাচ্ছে না। বরং ডিলার ও খুচরা ব্যবসায়ীদের কারসাজির কারণে বাজারে তিন গুণ দামে সার বিক্রি হচ্ছে। চলতি নভেম্বর মাসে নাচোল উপজেলায় ডিএপি সারের বরাদ্দ হয়েছে ১ হাজার ৪৫ মেট্রিক টন। শীতকালীন সবজি, আলু, গম, ভুট্টা, মসুরসহ বিভিন্ন ফসলের মৌসুমে কৃষকেরা যখন সবচেয়ে বেশি সার প্রয়োজন, তখনই তারা সংকটে পড়েছেন। সারের জন্য শীতের রাতেও কৃষকদের ডিলারদের দোকানে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। একদিন লাইন ধরে থেকেও পরদিন সার না পাওয়ার অভিযোগও করেছেন অনেকে।
খেসবা গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, বিসিআইসির ডিলারের দোকানে সোমবার (২৪ নভেম্বর) লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও সার পাইনি। অথচ খুচরা ব্যবসায়ীরা ঠিকই তিন গুণ দামে ডিএপি সার বিক্রি করছেন। যদি সারের সংকটই থাকে, তাহলে খুচরা ব্যবসায়ীরা এত সার পাচ্ছেন কোথা থেকে?
এদিকে, সোমবার শিংরইল গ্রামের খুচরা সার ব্যবসায়ী হাসান আলী আমনুরা থেকে ডিএপি সার এনে তিন গুণ দামে বিক্রি করছেন- এমন অভিযোগ কৃষি কর্মকর্তা ও ইউএনওকে জানানো হলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে স্থানীয়দের দাবি।
কৃষক বিশ্বনাথ মাহাতো বলেন, কৃষি কর্মকর্তা এসে ডিলারদের নিকটাত্মীয় কৃষকদের মাঝে ন্যায্যমূল্যে সার বিতরণ করলেও তা ছিল লোক দেখানো। পরে সেই সার আবার খুচরা ব্যবসায়ী হাসান আলী কৃষকদের কাছ থেকে ফেরত নিয়ে তিন গুণ দামে বিক্রি করেন।
কৃষকদের অভিযোগ, সার বিতরণে কঠোর ব্যবস্থা না নেওয়া ও সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে প্রশাসনের নীরবতা- এই দুয়ের কারণে নাচোলে ডিএপি সারের সংকট তৈরি হয়েছে। কৃষি অফিস ও উপজেলা প্রশাসনের কার্যকর নজরদারি না থাকায় ব্যবসায়ীরা সহজেই সংকট সৃষ্টি করে বাড়তি দামে সার বিক্রি করতে পারছে।
নাচোল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সলেহ আকরাম বলেন, নাচোলে কিছুটা ডিএপি সারের সংকট আছে, তবে তা দ্রুত সমাধান করা হবে। সার বিতরণে প্রতিটি ডিলারকে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. শাহাদাত হোসেন মাসুদ বলেন, তিনি সদ্য যোগদান করেছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জোহরুল ইসলাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ (নাচোল)