গণফোরাম জনপ্রিয় দল হয়ে উঠছে : ড. কামাল
৮৩তম জন্মদিন উপলক্ষে গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেনকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন দলের নেতাকর্মীরা। রাজধানীর আরামবাগের ইডেন কমপ্লেক্সে শনিবার গণফোরামের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ড. কামালের জন্মদিন উদযাপন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
দলের নেতাকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ড. কামাল বলেন, গণফোরাম এখন জনপ্রিয় দল হয়ে উঠছে। অনেক দল এখন গণফোরামের সঙ্গে আছে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির মাধ্যমে স্বাধীনতার লক্ষ্য অর্জনে দলের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান ড. কামাল হোসেন। সেই সঙ্গে বিভিন্ন পর্যায়ে দলের সদস্য সংগ্রহের কাজ এগিয়ে নেওয়ার নির্দেশনা দেন তিনি। সংগঠনকে শক্তিশালী করতে আগামী ২৬ এপ্রিল বিশেষ কাউন্সিল অধিবেশন আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছে দলটি।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর আগেই আন্দোলনের মাধ্যমে জনগণ পরিবর্তন আনতে সফল হবে বলে আশা প্রকাশ করেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন।
জন্মদিন উদযাপনের অনুষ্ঠান শেষে গণফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে ড. কামাল বলেন, ‘দেশের জনগণ আন্দোলনের মাধ্যমে সফল হবে। কোটা (সংস্কার) আন্দোলন, নিরাপদ সড়ক আন্দোলনসহ গণতান্ত্রিক আন্দোলনে যেসব তরুণেরা সম্পৃক্ত ছিলেন, তাদের জন্য সামনের দিনগুলোতে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে। আমরা স্বাধীনতার ৫০ বর্ষপূর্তির আগেই সফল হব।’
জনগণের আকাঙ্ক্ষা অনুসারে দেশের গুণগত পরিবর্তনের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে জানিয়ে ড. কামাল আরো বলেন, ‘গঠনমূলক রাজনীতি ও রাজনৈতিক কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা জনগণের কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন আনতে সক্ষম হব।’
ড. কামাল বলেন, জনগণ একটি কার্যকর গণতন্ত্র চায় এবং দেশের গুণগত পরিবর্তনে সব পর্যায়ে তাদের কার্যক্রম বজায় রেখে অংশগ্রহণ চায়।
গণফোরমা এখন শক্তিশালী দল উল্লেখ করে ড. কামাল দলের নেতা-কর্মীদের প্রত্যেক ইউনিয়ন, থানা ও জেলায় জনগণকে জড়িত করে সাংগঠনিক ক্ষমতা বৃদ্ধির আহ্বান জানান। ‘আমাদের সংগঠনকে এমনভাবে গড়ে তুলতে হবে যাতে সকল স্তরের মানুষ এটিকে তাদের নিজস্ব সংগঠন ভাবতে পারে’, যোগ করেন তিনি।
গণফোরাম প্রধান দলে সদস্য বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে সব শ্রেণি ও পেশাজীবীদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার জন্য দলের নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই স্মরণ রাখতে হবে যে শক্তিশালী সংগঠন ছাড়া অর্থপূর্ণ কার্যক্রম পরিচালনা ও দেশে পরিবর্তন আনা সম্ভব নয়। আমরা যদি আমাদের সংগঠনকে শক্তিশালী করতে পরি তাহলে গুণগত পরিবর্তন নিশ্চিত করতে পারব বলে আমি মনে করি।’
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহযোগী ড. কামাল ১৯৩৭ সালে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। মানবাধিকার কর্মী হামিদা খানমের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়া এ দম্পতির দুই কন্যা হলেন- সারা হোসেন ও দিনা হোসেন।
বিশ্বব্যাপী পরিচিত এ আইনজ্ঞ ১৯৫৭ সালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জুরিসপ্রুডেন্সে স্নাতক (সম্মান) এবং ১৯৫৮ সালে ব্যাচেলর অব সিভিল ল ডিগ্রি লাভ করেন। পরে লিংকনস ইনে বার-অ্যাট-ল অর্জনের পর ১৯৬৪ সালে আন্তর্জাতিক আইন বিষয়ে পিএইচডি করেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সঙ্গে রাজনীতিতে সম্পৃক্ত থাকা ড. কামাল ১৯৯২ সালে আওয়ামী লীগ থেকে বেরিয়ে গণফোরাম নামে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে তিনি বিএনপিসহ অন্য কয়েকটি দলকে নিয়ে গঠন করেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। নির্বাচনে এ জোট আটটি আসন পায়।