ফটোসাংবাদিক ও ব্লগার অভিজিৎকে হত্যা
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2015/02/26/photo-1424969723.jpg)
ফটোসাংবাদিক ও ব্লগার অভিজিৎ রায়কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে একদল দুর্বৃত্ত কুপিয়ে হত্যা করেছে। তিনি মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞানের সাবেক অধ্যাপক ড. অজয় রায়ের ছেলে।
ওই ঘটনায় অভিজিৎ রায়ের স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যাকেও জখম করেছে দুর্বৃত্তরা। রাফিদা আহমেদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক রেজা। তিনি জানান, গুরুতর জখমসহ আহতদের হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করানো হয়। সাড়ে ১০টার দিকে অভিজিৎ মারা যান।
ঢামেক জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক সোহেল আহমেদ এনটিভি অনলাইনকে জানান, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ এবং মস্তিষ্কে আঘাতের কারণে অভিজিৎের মৃত্যু হয়েছে। তার মাথায় কমপক্ষে নয়টি আঘাতের চিহ্ন ছিল।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে টিএসসির বটতলায় এ ঘটনা ঘটে বলে এনটিভি অনলাইনকে জানিয়েছেন শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম। তিনি জানান, কী কারণে তাঁদের ওপর এই হামলা হয়েছে, তা জানা যায়নি। তবে পুলিশ ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সাংবাদিকদের জানান, অভিজিৎ তাঁর লেখার জন্য দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন মহল থেকে হুমকি পেয়ে আসছিলেন। লেখালেখির কারণেও তাঁকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে বলে তিনি সাংবাদিকদের জানান।
প্রয়াত প্রখ্যাত লেখক হুমায়ুন আজাদ এবং অভিজিতের হত্যাকারীরা একই চক্রের হয়ে থাকতে পারে বলেও সন্দেহ পোষণ করেন তিনি।
রমনা জোন পুলিশের সহকারী কমিশনার শিবলী নোমান এনটিভি অনলাইনকে জানান, হুমায়ুন আজাদ এবং অভিজিতের হত্যার ধরনে তাঁরা মিল খুঁজে পেয়েছেন।
ঘটনাস্থল থেকে দুটি চাপাতি ও একটি ব্যাগ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান নোমান।
প্রকৌশলী অভিজিৎ রায় ও তাঁর স্ত্রী আমেরিকায় বসবাস করতেন। বইমেলা উপলক্ষে এক সপ্তাহ আগেই তাঁরা ঢাকায় এসেছিলেন বলে জানা যায়।
অভিজিৎ হত্যার প্রতিবাদে প্রগতিশীল ছাত্র জোট আজ শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলা ভাস্কর্যের সামনে প্রতিবাদী সমাবেশ করবে। এ ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকগণ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে মানববন্ধন করবেন বলে জানা গেছে।
এ ঘটনার প্রতিবাদে গণজাগরণ মঞ্চ রাজধানীর শাহবাগে টানা অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে।
‘অবিশ্বাসের দর্শন’, ‘আলো হাতে চলিয়াছে আঁধারের যাত্রী’, ‘মহাবিশ্বে প্রাণ ও বুদ্ধিমত্তার খোঁজে’, ‘ভালোবাসা কারে কয়’, ‘ভিক্টোরিয়া ওকাম্পো : এক রবি-বিদেশিনীর খোঁজে’ অভিজিৎ রায়ের প্রকাশিত গ্রন্থগুলোর অন্যতম।
লেখক অভিজিৎ রায়কে যে স্থানে কুপিয়ে হত্যা করা হয়, তার পাশেই ২০০৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি বইমেলা থেকে বের হওয়ার সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও বহুমাত্রিক লেখক ড. হুমায়ুন আজাদকে কুপিয়েছিল দুর্বৃত্তরা।