দূষিত রাজনীতির বিষবাষ্পে দম বন্ধের উপক্রম
বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন বলেছেন, দেশে এখন শাসক দল দোষারোপের রাজনীতি করতেই বেশি পছন্দ করছে। যেকোনো ঘটনা ঘটলে, পূর্বাপর বিচার-বিশ্লেষণ না করেই শাসকগোষ্ঠীর পক্ষ থেকে রাজনৈতিক পক্ষকে ঘায়েল করার অপচর্চা এখন রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। যা কোনোভাবেই সুস্থ রাজনীতির লক্ষণ নয়। বরং অসুস্থ দূষিত রাজনীতির বিষবাষ্পে মানুষের এখন দম বন্ধ হওয়ার উপক্রম।
urgentPhoto
আজ বুধবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন বিএনপির মুখপাত্র। এ সময় তিনি আরো বলেন, সরকারের বিভিন্ন পর্যায় থেকে বিএনপির বিরুদ্ধে যেসব অবাঞ্ছিত মন্তব্য প্রকাশ করা হচ্ছে, তা বাংলাদেশের রাজনীতি সম্পর্কে ভবিষ্যতের জন্য কোনো আশাবাদের জায়গা আর থাকছে না।
সংবাদ সম্মেলেনে লিখিত বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর সাম্প্রতিক সময়ে নানা বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও সমালোচনা করা হয়। এতে বলা হয়, ‘দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তিনি (ইনু) ও তাঁর সহযোগীরা কীভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবর রহমানকে একদিনের জন্যও শান্তিতে থাকতে দেননি- সে কথা আওয়ামী লীগের সে সময়ের নেতাকর্মীরা এখনো ভুলে যেতে পারেন না। জাসদীয় রাজনীতি ও তথাকথিত বেআইনি সশস্ত্র সংগঠন গণবাহিনী, বিপ্লবী সৈনিক সংস্থা কোনো অংশেই কম দায়ী না। দেশে যে একদলীয় বাকশাল-কর্তৃত্ববাদী শাসনব্যবস্থা তখন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, তার জন্য অনেকাংশে তাঁরাই দায়ী।
তথ্যমন্ত্রীর মুখে এখন গণতন্ত্রের কথা অনেকটাই ‘ভূতের মুখে রাম নাম জপের মতোই শোনায়’ বলে মন্তব্য করেন বিএনপির মুখপাত্র।
জাতীয় সংকট মোকাবিলায় বিএনপি যে জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানিয়ে আসছে, তার বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করাই তথ্যমন্ত্রীর লক্ষ্য উল্লেখ করে আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, ‘কারণ দেশে এখন একটি অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে ইনু সাহেবদের মতো মানুষের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়ে যাবে। সে আশঙ্কা থেকেই ইনু ও তাঁর মতো লোকেরা দেশে হিংসাশ্রয়ী-বিভেদের রাজনীতিকে আরো উসকে দিচ্ছেন এখন।’
দলের অসুস্থ ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয় বিএনপির পক্ষ থেকে। পাশাপাশি দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় প্রতিবাদও জানানো হয়। আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, ‘বিরোধী দলের রাজনীতি করার সব ক্ষেত্র এভাবে সংকোচন করে সরকার নগ্ন ফ্যাসিবাদী আচরণের বহিঃপ্রকাশ ঘটাচ্ছে বলে আমরা মনে করি।’
দেশের বিরাজমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক বলেন, ‘দুজন বিদেশির হত্যাকাণ্ড, একজন প্রকাশকের হত্যাকাণ্ড এবং আরো তিনজন লেখক-প্রকাশকের ওপর দুর্বৃত্তদের হামলার ঘটনার মধ্যে দুজন পুলিশ সদস্যের হত্যাকাণ্ডের ঘটনা সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে।’
এ ধরনের পরিস্থিতি কোনোভাবেই স্বাভাবিক নয় উল্লেখ করে ঘটনায় জড়িত দায়ীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান বিএনপির এ নেতা।
বিএনপির মুখপাত্র আরো বলেন, এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের পথ হচ্ছে জাতির ইস্পাত কঠিন ঐক্য। বিরোধী দলের নেতাদের গ্রেপ্তার করে, বিরোধী দলের বিরুদ্ধে দোষারোপের রাজনীতি করে জাতির এই সংকটকে দূর করা যাবে না।