তথ্য দেখে ডিবি বলছে, জঙ্গি সংগঠনের কাজ
ব্লগার ও লেখক অভিজিৎ রায় হত্যাকাণ্ডের এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) ধারণা করছে, এর পেছনে উগ্রবাদী জঙ্গি সংগঠন জড়িত।
আজ রোববার দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) জনসংযোগ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক এক আলোচনায় ডিবির যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম এ ধারণার কথা জানান।
অভিজিৎ রায় হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে কারা জড়িত বলে ধারণা করছেন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মনিরুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনার পর আনসারউল্লাহ বাংলা-সেভেন নামে একটি গোষ্ঠী দায় স্বীকার করেছে। এ হত্যাকাণ্ডে প্ররোচণার দায়ে পুলিশ শফিউর রহমান ফারাবীকে গ্রেপ্তার করেছে। এখন পর্যন্ত যেসব তথ্য পাওয়া গেছে, তাতে ধারণা করা হচ্ছে, এটি উগ্রবাদী কোনো জঙ্গি সংগঠনের কাজ।
এ হত্যাকাণ্ডে মার্কিন জাতীয় তদন্ত সংস্থা এফবিআইয়ের সহযোগিতার ব্যাপারে ডিবি পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘এফবিআইয়ের চার সদ্স্য ঢাকায় এসেছেন। তাঁদের সঙ্গে ডিবি পুলিশের একাধিক বৈঠক হয়েছে। এফবিআই সদস্যরা গোয়েন্দাদের কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডের ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা নিয়েছেন। তাঁরা ঘটনাস্থলে গেছেন। এ হত্যাকাণ্ডের আলামত সংগ্রহের দায়িত্বে আছে সিআইডি ক্রাইম সিন। তাদের সঙ্গেও এফবিআই বৈঠক করেছে। এফবিআই আমাদের জানিয়েছে, তারা এ হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে সব ধরনের সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত আছে। এখন পর্যন্ত যতটুকু কাজ হয়েছে তাতে তারা সন্তোষ প্রকাশ করেছে।’
‘প্রয়োজনে এফবিআই সদস্যরা আরো কয়েকদিন বাংলাদেশে থাকবেন এবং সব ধরনের সহায়তা করবেন বলে আমাদের জানিয়েছেন। মূলত ডিবি পুলিশ এ হত্যার তদন্ত কাজে প্রযুক্তিগত সহায়তা চেয়েছে।’ বলেন মনিরুল ইসলাম।
অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত শফিউর রহমান ফারাবীকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে উল্লেখ করে মনিরুল ইসলাম বলেন, এ ছাড়া আরো একজনকে আটক করা হয়েছিল। পরে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে তাঁকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে। ফারাবীকে জিজ্ঞাসাবাদে বেশ কিছু নাম জানা গেছে যারা ফেসবুকে তার অ্যাসোসিয়েট (সহযোগী) ছিল। তাদের একটি তালিকা প্রস্তুত রয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
‘ফারাবী ফেসবুকে অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করত বলে স্বীকার করেছে। তবে হত্যাকাণ্ডে সরাসরি ফারাবীর সম্পৃক্ততার ব্যাপারে আমরা এখনো জানতে পারিনি। ফারাবী মূলত হুমকিদাতা ছিল। ফেসবুকে ৯-১০ জন তাঁকে সাপোর্ট করেছে। এর বাইরে আরো লোকজন থাকতে পারে।’ বলেন মনিরুল ইসলাম।
এফবিআই ফারাবীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে কিনা - এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ডিবির যুগ্ম কমিশনার বলেন, এফবিআইয়ের সরাসরি ফারাবীকে জিজ্ঞাসাবাদের কোনো সুযোগ নেই। যদি প্রয়োজন হয় তবে ডিবির মাধ্যমে সহযোগিতা নিতে পারবে।
এফবিআই প্রতিনিধিদলের সদস্যরা বেলা ১১টা ৩৮ মিনিটে ডিবি কার্যালয়ে যান। সেখানে ১০ মিনিট থেকে তাঁরা সিআইডি কার্যালয়ে চলে যান। সেখানে এক ঘণ্টা বৈঠক করে আবার তাঁরা ডিবি কার্যালয়ে যান।