ঝিনাইদহের আলোচিত হুন্ডি কাজলের তিন বছরের কারাদণ্ড
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2016/01/26/photo-1453760163.jpg)
ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরের আলোচিত হুন্ডি ব্যবসায়ী ফারুক আহম্মদ ওরফে হুন্ডি কাজলের ৩ বছরের কারাদণ্ডাদেশসহ ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
তবে একই মামলার বাকি ৯৭ আসামির সবাইকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। সোমবার দুপুরে এ রায় ঘোষণা করেন ঝিনাইদহের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এস এম মনিরুজ্জামান।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৩ সাল থেকে ৯৯ সাল পর্যন্ত ছয় বছরে ‘আকিব ও সলেমানপুর সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি’র নামে ওই অঞ্চলের হাজার হাজার নারী পুরুষের কাছ থেকে অধিক মুনাফার লোভ দেখিয়ে আড়াই হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেন কাজল ও তাঁর সহযোগীরা।
২০০০ সালের ৭ মে কাজলের অন্যতম সহযোগী রত্না টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় জনতার হাতে আটক হয় । এর পরের দিন ৮ মে কোটচাঁদপুর শহরের তাণ্ডব শুরু হয় । শতাধিক বাড়িঘর ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেন লগ্নিকারীরা। তাদের হাতে খুন হন কাজলের দুই এজেন্ট।
এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০০০ সালের ৯ মে রাতে কোটচাঁদপুরের তৎকালীন পুলিশ সুপার খান সাইদ হাসান কাজলকে আটক করে কারাগারে বন্দি করেন ।
এ ব্যাপারে কোটচাঁদপুর থানায় ১৪০ জনের নামে মামলা দায়ের করেছিলেন যশোরের তৎকালীন সহকারী পুলিশ সুপার (সিআইডি) দুলাল উদ্দিন আখন্দ।
থানা পুলিশ মামলা তদন্ত করে কাজলসহ ৯৮ জনের নামে ২০০০ সালের ২ ডিসেম্বর চার্জশিট প্রদান করে। এর মাঝে কয়েক দফায় কাজলকে প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হয় । তিনি লগ্নিকারীদের টাকা ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে কারাগার থেকে জামিনে বেরিয়ে যান। আজ পর্যন্ত তিনি পলাতক রয়েছেন।
একজন লগ্নিকারীও লগ্নিকৃত টাকা ফেরত পাননি। কাজলের জালিয়াতির শিকার হয়ে সে সময় কয়েক জন নারী পুরুষ আত্মহত্যা করেছিলেন। তাছাড়া অনেক সংসারও ভেঙে যায়।
জনতার চাপে সে সময়কার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম কোটচাঁদপুরে ছুটে গিয়েছিলেন। তিনি লাখো জনতার উপস্থিতিতে কাজলের কাছ থেকে লগ্নির টাকা আদায়ের জন্য সব কিছু করার বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু তাতে কাজ হয়নি।
হুন্ডি ব্যবসার খবর পরিবেশন করার জের ধরে খুন হন যশোরের প্রথিতযশা সাংবাদিক সামছুর রহমান। সেই অবৈধ হুন্ডি ব্যবসার প্রধান নায়ক কাজলের মামলার রায়ের বিষয়ে আগাম কোনো খবরও ছিল না।
দুপুরে রায় জানানোর পর রাতে বিষয়টি জানাজানি হলে শহরজুড়ে হৈ চৈ পড়ে যায়। আদালত সূত্র জানায়, মামলার রায়ে কাজলকে পলাতক দেখানো হয়েছে। এ মামলার অন্যতম আসামি ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা মরহুম নাসির উদ্দিন কালু, রেজা কমিশনার, সরাফত হোসেনসহ আরো ৯৭ জন। তবে তারা সবাই বেকসুর খালাস পেয়েছেন।
হুন্ডি কাজল কোটচাঁদপুরের সলেমানপুর গ্রামের শওকত আহ্ম্মদ ওরফে পচার ছেলে । হুন্ডি ব্যবসার আগে তিনি বইয়ের ব্যবসা করতেন। ফারুক লাইব্রেরি নামের তাঁর একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ছিল।