তিনদিনের ছুটিতে বান্দরবানে পর্যটকের ঢল
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2016/02/21/photo-1456014084.jpg)
প্রকৃতির নির্মল ছোঁয়া পেতে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি বান্দরবানে যেন ঢল নেমেছে পর্যটকদের। জেলার অন্যতম পর্যটন স্পট নীলাচল, নীলগিরি, মেঘলা, চিম্বুকসহ দর্শনীয় স্থানগুলোতে এখন পর্যটকের উপচেপড়া ভিড়। পর্যটকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, একুশে ফেব্রুয়ারিসহ টানা তিনদিনের ছুটির আনন্দে বান্দরবানে এসেছেন ভ্রমণপিপাসু পর্যটকরা।
গতকাল শনিবার দর্শনীয় স্পটগুলো ঘুরে দেখা গেছে কোথাও তিল ধারণের ঠাঁই নেই। পর্যটকদের পদচারণায় এখন মুখরিত শহরের আবাসিক হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট এবং গেস্টহাউসগুলো। কোথাও কোনো সিট খালি না থাকায় ভ্রমণপিপাসু মানুষ এখন দুর্গমাঞ্চলে পাহাড়িদের মাচাং ঘরগুলোকে থাকার বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে বেছে নিচ্ছে। অনেকে আবার ভ্রমণে এসেও কোথাও থাকার ব্যবস্থা করতে না পেরে ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।
পর্যটনের অফুরন্ত সম্ভাবনাময় বান্দরবানে প্রকৃতির নির্মল ছোঁয়া পেতে প্রতিদিনই ছুটে আসছে এখন পর্যটকরা। মেঘলা লেকের ওপর নির্মিত ঝুলন্ত সেতু এবং শৈলপ্রপাত ঝর্ণার স্বচ্ছ পানিতে গা ভাসাচ্ছেন হাজার হাজার পর্যটক। নীলাচল এবং নীলগিরি পর্যটন স্পটে পাহাড়ের সবুজ সমুদ্র দেখে মন জুড়াচ্ছেন তাঁরা। পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত নীলাচল এবং নীলগিরি পর্যটন কেন্দ্রগুলো যেন সবুজ কার্পেটে মোড়ানো রয়েছে।
রাজশাহী থেকে বেড়াতে আসা পর্যটক তুষার চৌধুরী, শ্রাবন্তি রহমান ও জাহেদুল ইসলাম বলেন, পাহাড় সবসময় সুন্দর। বর্ষায় এক রকম এবং শীতে আরেক রকম। এবার বসন্তে বেড়াতে এসে দেখলাম পাহাড়গুলো সেজেছে ফুলে ফুলে।
তবে স্বর্ণ মন্দির স্পট ভ্রমণ বন্ধ করে দেওয়ায় অনেক পর্যটকই হতাশ হয়েছেন। অনেকেই আবার ভ্রমণে গিয়ে নিষেধাজ্ঞার কারণে স্বর্ণ মন্দিরে ঢুকতে পারেনি। দূর থেকে দেখেই ফিরে আসতে হয়েছে।
প্রকৃতি নিজেকে মেলে ধরেছে পর্যটন নগরী বান্দরবানে। শুধু বর্ষা এবং শীত নয়, সারাবছরই বৈচিত্র্যময় রূপের রানি বান্দরবানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের খ্যাতি ছড়িয়েছে ইতিমধ্যে দেশের বাইরেও। পর্যটকরা এখানকার সৌন্দর্য উপভোগে ঘুরে বেড়াচ্ছেন পাহাড়ি জনপদে। কি নেই এখানে প্রাকৃতিক লেক, ঝর্ণা, বাদুরগুহা, আলীর সুরঙ্গপথ, ঝুলন্ত সেতু, স্বর্ণ মন্দির, পর্বতচূড়া এবং ভিন্ন ভাষার ১১টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বৈচিত্রম্যয় সংস্কৃতি এ জেলার সৌন্দর্য বাড়িয়েছে আরো বহুগুণে।
তবে অপার সৌন্দর্যে পর্যটকরা মুগ্ধ হলেও যোগাযোগ ব্যবস্থা, আবাসন, নিরাপত্তা এবং পর্যটন স্পটগুলোর আরো উন্নয়নের দাবি পর্যটকদের। সরকার এবং স্থানীয় পর্যটন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর সদিচ্ছার অভাবে পাহাড়ে পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটছে না অভিযোগ স্থানীয়দের।
এ বিষয়ে বান্দরবান হোটেল রেসিডেনশিয়াল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, একুশে ফেব্রুয়ারিসহ তিনদিনের বন্ধে পর্যটকদের ঢল নেমেছে বান্দরবানে। শহরের আবাসিক হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট এবং গেস্ট হাউসগুলোর কোথাও কোনো সিট খালি নেই। এ কদিন পর্যটকের বাড়তি চাপ দেখা যাচ্ছে।
বান্দরবানের জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক জানান, পর্যটকরা হচ্ছে বান্দরবানের জন্য অতিথি। অতিথিদের নিরাপদ এবং স্বাচ্ছন্দে ভ্রমণে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কোনো ধরনের পর্যটক হয়রানির খবর পাওয়া গেলেই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পর্যটকদের সুবিধার্থে বান্দরবানে আরো নতুন নতুন দর্শণীয় স্থান খুঁজে বের করা হবে।