রাষ্ট্রপক্ষের শুনানি শেষ হচ্ছে কাল

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর নেতা মীর কাসেম আলীর মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আপিলের শুনানি আগামীকাল বুধবার শেষ হচ্ছে।
আজ মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহার নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের বেঞ্চে এ শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
বেঞ্চের অন্য সদস্যরা হলেন বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও বিচারপতি বজলুর রহমান।
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মীর কাসেম আলীর আপিলের শুনানি শুরু হয়। আসামিপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন ও এস এম শাহজাহান। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
এর আগে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি এ বিষয়ে শুনানি হয়। ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আসা এটি হলো সপ্তম মামলা।
২০১৪ সালের ২ নভেম্বর মীর কাসেম আলীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় ঘোষণা করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ওই রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের ৩০ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় মীর কাসেম আলীর পক্ষে আপিল করেন জয়নুল আবেদীন তুহিন। মীর কাসেমের পক্ষে ১৮১টি গ্রাউন্ডে মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস চেয়ে এ আপিল করা হয়েছে।
ট্রাইব্যুনালের রায়ে মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে প্রসিকিউশন আনা মোট ১৪টি অভিযোগের মধ্যে ১০টি প্রমাণিত হয়। এগুলো হলো ২, ৩, ৪, ৬, ৭, ৯, ১০, ১১, ১২ ও ১৪ নম্বর অভিযোগ। এর মধ্যে দুটিতে (১১ ও ১২ নম্বর অভিযোগে ) মীর কাসেম আলীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া চারটি অভিযোগে তাঁকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
১১ নম্বর অভিযোগে রয়েছে কিশোর মুক্তিযোদ্ধা জসিমসহ ছয়জনকে আটক, নির্যাতন ও হত্যার অভিযোগ। এ অভিযোগে বিচারকরা সর্বসম্মতিক্রমে মীর কাসেমকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন। ১২ নম্বর অভিযোগে রয়েছে রঞ্জিত দাস ও টুন্টু সেনকে নির্যাতন ও হত্যার অভিযোগ। এ অভিযোগে বিচারকদের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে রায় দেওয়া হয়। ১১ ও ১২ নম্বর ছাড়া বাকি ১২টি অভিযোগই অপহরণের পর আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ মীর কাসেমের বিরুদ্ধে।
প্রমাণিত অভিযোগগুলোর মধ্যে ২ নম্বর অভিযোগে তাঁকে ২০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ৩, ৪, ৬, ৭, ৯ ও ১০ নম্বর অভিযোগে তাঁকে সাত বছর করে মোট ৪২ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ১৪ নম্বর অভিযোগে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এই আটটি অভিযোগে তাঁকে সর্বমোট ৭২ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
তবে ১, ৫, ৮ ও ১৩ নম্বর অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাঁকে এসব অভিযোগ থেকে খালাস (অব্যাহতি) দেওয়া হয়।