হত্যার ৩ দিন পর গৃহবধূর লাশ ময়নাতদন্ত
ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার মান্দারতলা গ্রামের আলীপুরপাড়ায় সালমা আক্তার তানজিনা (২৫) নামের এক গৃহবধূর লাশ ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এর তিন দিন পর গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে লাশের ময়নাতদন্ত অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ময়নাতদন্তের পরিপ্রেক্ষিতে প্রাথমিক আলামতে পাওয়া গেছে যে, নির্যাতনের পর তানজিনাকে হত্যা করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট থানার এসআই ফরিদ উদ্দিন রাত ১০টার দিকে এ খবর নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে, নিহতের স্বামী ফজলুল কাদের সাধন ঘটনার পর থেকে পলাতক। নিহত গৃহবধূ মহেশপুর উপজেলার মান্দারতলা গ্রামের আবদুল হকের মেয়ে। চার বছর আগে প্রেম করে একই গ্রামের আবদুল কাদের মাস্টারের ছেলে ফজলুল কাদের সাধনের সঙ্গে সালমা আক্তার তানজিনার বিয়ে হয়। তাঁদের একটি মেয়ে রয়েছে।
নিহতের ভাই সাইফুল ইসলাম মিলন অভিযোগ করেন, দুই মাস ধরে তাঁর ভগ্নিপতির সঙ্গে বোনের বনিবনা হচ্ছিল না। তিনি আরো জানান, মঙ্গলবার রাতে ঝগড়া হলে ভগ্নিপতি তাঁর বোনকে হাত-পা বেঁধে চরমভাবে মারধর করে। এর পর ঘরের আড়ার সঙ্গে লাশ ঝুলিয়ে রেখে ‘স্ত্রী আত্মহত্যা করেছে’ বলে প্রচার করতে থাকে। অভিযোগ করা হয়েছে, প্রভাবশালীদের সহায়তায় ময়নাতদন্ত না করেই লাশ দাফনের চেষ্টা করা হয়।
এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী মহেশপুরের থানার এসআই ফরিদ আহম্মেদ বলেন, লাশের শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন পাওয়া গেছে। বুধবার নিহতের লাশ উদ্ধার করে থানায় রাখা হয় এবং গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে লাশের ময়নাতদন্ত করানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে থানায় গত ২ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৪টা ২৫ মিনিটে ১০ নম্বর অপমৃত্যুর মামলা করা হয়েছে । নিহতের বাবা বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছেন। ময়নাতদন্তে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট পাওয়ার পরে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান এসআই ফরিদ আহম্মেদ।
নিহতের মা রাবেয়া খাতুনের কথা, তাঁর মেয়ে আত্মহত্যা করতে পারে না। তাঁকে নির্যাতনের পর হত্যা করা হয়েছে। ময়নাতদন্তকারী ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের চিকিৎসক মোজাম্মেল হক জানান, তানজিনার মরদেহে নির্যাতনের চিহ্নসহ প্রাথমিক হত্যার আলামত পাওয়া গেছে।
সব শেষ খবরে জানা গেছে, ময়নাতদন্ত শেষে বৃহস্পতিবার রাতেই নিজ গ্রামে লাশ দাফন করা হয়েছে। ঘটনার তিন দিন পর লাশের ময়নাতদন্ত করানোর পেছনের ঘটনা তদন্তের দাবি করেছেন নিহতের স্বজনরা।