যুগপূর্তিতে বর্ণিল স্কুলবেলা
সকাল থেকেই শহরের সব মাধ্যমিক স্কুলের বন্ধুরা একে একে এসে হাজির শিশুনিকেতনে। আয়োজকদের ব্যস্ততা আর প্রস্তুতিও শেষ। ঘড়ির কাঁটায় যখন সাড়ে ১০টা, তখনই শুরু সব আয়োজন।
একের পর এক এক করে নানা সেশন, আলোচনা, ভারী আলোচনার মাঝে কখনো কখনো গান বা আবৃত্তি আর শেষ বিকেলে সমাপনী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শেষ হলো পাহাড়ের স্কুলপড়ুয়াদের প্রিয় পত্রিকা স্কুলবেলার এক যুগপূর্তি উৎসব।
আজ মঙ্গলবার সকালে বুকে হাত রেখে একসঙ্গে জাতীয় সংগীত ‘আমার সোনার বাংলা...আমি তোমায় ভালোবাসি’ গেয়ে শুরু হওয়া দিনব্যাপী আয়োজনটি বিকেলে শেষ হয় ‘আমরা করব জয় একদিন...’ গেয়ে।
সকালের শুরুতেই স্কুলবেলার লক্ষ্য, উদ্দেশ্য এবং স্বপ্ন নিয়ে বক্তব্য দেন স্কুলবেলার সম্পাদক ফজলে এলাহী। এরপর ১২ বছর আগে স্কুলবেলার যাত্রা শুরুর গল্প, পথ চলতে নানা প্রতিবন্ধকতা আর বন্ধুর পথে হাঁটার সেই সব কঠিন দিনের স্মৃতিচারণা করেন স্কুলবেলার প্রথম সম্পাদক জসীমউদ্দীন। জসীমউদ্দীনের বক্তব্যের পর বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীরা সাংস্কৃতিক আয়োজনে অংশ নেয়।
এরপর বিতর্ক চর্চার নিয়মাবলি ও শুদ্ধ উচ্চারণবিষয়ক কর্মশালা পরিচালনা করেন গ্লোবাল ভিলেজের পরিচালক সৈয়দ হেফাজত উল বারী সবুজ।
সবশেষে স্কুলবেলা বন্ধু ফোরামের পেছনের গল্প, বর্তমান অবস্থা এবং স্কুলবেলার আদ্যপান্ত নিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনায় অংশ নেয় স্কুলবেলা দল। এই দলে ছিলেন সহযোগী সম্পাদক মিশু দে, সাজিদ বিন জাহিদ, এ্যানি মেরিলিন মারমা, তুষার ধর, শ্রাবণ রায়, সীমা ত্রিপুরা, সামিয়া হক ও অতিন্দ্রিলা পাটোয়ারি।
দুপুরে খাবার বিরতির পর অনুষ্ঠিত হয় ‘নারীর অধিকার রক্ষায় প্রধান প্রতিবন্ধক পুরুষ’-বিষয়ে প্রীতি বিতর্ক প্রতিযোগিতা। এতে অংশ নেয় রাঙামাটি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও রাঙামাটি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়।
বিতর্ক শেষে সমাপনী আয়োজনে অতিথি ছিলেন রাঙামাটির সনামধন্য তিন মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তিন প্রধান শিক্ষক। এঁরা হলেন শহীদ আব্দুল আলী একাডেমির নজরুল ইসলাম চৌধুরী, রাণী দয়াময়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের রণতোষ মল্লিক ও শাহ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের মুজিবুর রহমান।
এ্যানি মেরিলিন মারমার সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন স্কুলবেলার প্রথম সম্পাদক জসীমউদ্দীন ও গ্লোবাল ভিলেজের পরিচালক সৈয়দ হেফাজত সবুজ।
যুগপূর্তিতে পাহাড়ের প্রথম অনলাইন ব্ল্যাড ব্যাংক জীবন, রাঙামাটি পার্ক রক্ষার জন্য পরিবেশবাদী সংগঠন গ্লোবাল ভিলেজ, স্কুলবেলার প্রথম সম্পাদক জসীমউদ্দীন ও বর্তমান সম্পাদক ফজলে এলাহীকে সম্মাননা স্মারক দেওয়া হয়। এ ছাড়া বিতর্ক প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে তুলে দেওয়া হয় শুভেচ্ছা পুরস্কার।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে অতিথিরা বলেন, যখন পাহাড়ের স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা বিকাশের কোনো উদ্যোগ বা আয়োজন ছিল না, সেই কঠিন সময়ে দাঁড়িয়ে যারা স্কুলবেলা প্রকাশ করেছেন তাঁদের সাধুবাদ জানাই। শুধু প্রকাশ করাই নয়, দীর্ঘ এক যুগ ধরে ধারাবাহিকভাবে এর প্রচার অব্যাহত রাখা সহজ কাজ নয়। তারা স্কুলবেলার সঙ্গে জড়িতদের সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।