রাজশাহী সিটির মেয়র বুলবুল কারাগারে
রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র বিএনপি নেতা মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল দীর্ঘদিন আত্মগোপনে থাকার পর নয়টি মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন।
আজ রোববার সকালে বুলবুল রাজশাহীর আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন জানান। দুপুরে তিনটি মামলায় বিচারক তাঁর জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠিয়ে দেন।
বুলবুলের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রইসুল ইসলাম জানান, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর সরকারবিরোধী আন্দোলন চলাকালে মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় নয়টি মামলা করা হয়। এসব মামলায় হাজিরা না দেওয়ায় প্রতিটিতে তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি ছিল। সর্বশেষ গত ৭ মার্চ রাজশাহী মুখ্য মহানগর হাকিম মিজানুর রহমান সরকারি কাজে বাধাদানের একটি মামলায় বুলবুলের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
আজ সকালে মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল সব কটি মামলায় রাজশাহীর তিনটি আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। এর মধ্যে বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে বুলবুল একটি মামলায় মুখ্য মহানগর হাকিম মিজানুর রহমানের আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত না জানিয়ে আদালত মহানগর কোর্টহাজতে পাঠান।
পরে দুপুর ১২টার দিকে বুলবুলকে চারটি মামলায় মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ আলতাফ হোসাইনের আদালতে তোলা হয়। সেখানেও তাঁর পক্ষে তাঁর আইনজীবীরা জামিনের আবেদন করেন। এরপর বুলবুলকে চারটি মামলায় মেট্রোপলিটন আদালত-৩-এর ‘প’ অঞ্চলের ম্যাজিস্ট্রেট জাহিদুল ইসলামের আদালতে তোলা হয়। ম্যাজিস্ট্রেট চারটি মামলার মধ্যে একটিতে জামিন দিলেও অন্য তিনটিতে জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেন। পরে বুলবুলকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়া হয়।
বুলবুলের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম।
২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের অবরোধ-হরতাল চলাকালে নয়টি মামলার আসামি হন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের নির্বাচিত মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। এর মধ্যে চারটি মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ। এ চারটি মামলার মধ্যে পুলিশ কনস্টেবল সিদ্ধার্থ হত্যা মামলাও রয়েছে।
একের পর এক মামলা দায়েরের পর থেকে পলাতক ছিলেন মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। গত বছরের ৭ মে পলাতক থাকা অবস্থায় তাঁকে মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের ওই বহিষ্কার আদেশে বলা হয়েছিল, ‘মেয়র বুলবুলের বিরুদ্ধে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চার্জশিট দাখিল হওয়ায় সিটি করপোরেশন আইনের ১২ (১) ধারা অনুযায়ী তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।’
এদিকে, মন্ত্রণালয়ের এ আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করেন মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। গত বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের বিচারপতি এমদাদুল হক ও বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়ার যৌথ বেঞ্চ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলকে মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্তের মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ অবৈধ ঘোষণা করেন।