গুলিতে ঢাবি ছাত্র নিহত, মামলা আমলে নিয়ে স্থগিত
মাদারীপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সুজন মৃধা নিহত হওয়ার ঘটনায় পুলিশ সদস্যসহ আটজনকে আসামি করে মামলা করেছেন নিহতের বাবা বাচ্চু মৃধা। জেলার মুখ্য বিচারিক হাকিম জাকির হোসেন আজ সোমবার ওই মামলা গ্রহণ করে স্থগিত করার আদেশ দেন।
মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) এনামুল হক মণ্ডলকে। এ ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন ডিবি সদস্য মাসুদ রানা, হারুন অর রশিদ, মো. আশিক এবং স্থানীয় ইয়াকুব আলী ফকির, আইয়ুব আলী ফকির, মনি মাতুব্বর ও রাসেল মুন্সি।
মামলার আর্জিতে জানা গেছে, গত ৩১ মার্চ মাদারীপুর সদর উপজেলার ধুরাইল ইউনিয়নের দক্ষিণ বিরঙ্গল নুরানী মাদ্রাসা কেন্দ্রে ইউপি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়। এ সময় নিহত সুজন মৃধার দাদা মোতালেব মৃধাকে প্রথমে সর্বোচ্চ ভোটপ্রাপ্ত হিসেবে ঘোষণা করা হলেও পরে পুলিশের এএসআই এনামুল হক মণ্ডলসহ পুলিশ সদস্যরা মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে ইয়াকুব ফকির নামের এক ব্যক্তিকে বিজয়ী ঘোষণা করেন। এর প্রতিবাদ করলে এএসআই এনামুল গুলি করার হুকুম দেন। হুকুম পেয়ে কনস্টেবল মাসুদ রানা গুলি করলে সুজন মৃধা নিহত হন। এ ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য ও আসামিরা বাঁচার জন্য এনামুল নিজে বাদী হয়ে মাদারীপুর সদর থানায় একটি মামলা করেন।
মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মো. সরওয়ার হোসেন বলেন, ‘একই ঘটনা একটি মামলাই হয়। এই ঘটনায় আগেই একটি মামলা হয়েছে তাই আদালত মামলা স্থগিত করেছেন। যদি নিহতের পরিবারের কিছু বলার থাকে তাহলে তদন্ত কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করে বলতে পারে।’
বাদীপক্ষের আইনজীবী মহিদুল ইসলাম এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র সুজন মৃধা নিহত হওয়ার বিষয়ে তাঁর বাবা বাচ্চু মৃধা আজ আদালতে মামলা করেন।
আদালত এই মামলার কার্যক্রম স্থগিত করার আদেশ দিয়েছেন। পুলিশ বাদী হয়ে যে মামলা করেছে সে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত এই মামলার কার্যক্রম স্থগিত রাখার আদেশ দিয়েছেন আদালত। আমরা এই আদেশের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উচ্চ আদালতের দারস্থ হব।’
সুজন মাদারীপুর সদর উপজেলার ধুরাইল ইউনিয়নের মিঠাপুর এলএন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও নটর ডেম কলেজে এইচএসসিতে জিপিএ ৫ পেয়ে পাস করেন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগে ভর্তি হন। সুজন বাবা-মায়ের বড় সন্তান। সুজনের বাবা বাচ্চু মৃধা অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন।