র্যালিতে শুরু মারমাদের সাংগ্রাই
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2016/04/12/photo-1460447703.jpg)
বান্দরবানে বর্ণাঢ্য র্যালির মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে মারমা সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী সাংগ্রাই উৎসব।
বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের এবারের প্রতিপাদ্য- ‘নতুন আশা আজ নবপ্রভাতে, শিশু-নারীসহ সকলে থাকুক শান্তিতে, বন্ধ হোক যত সহিংসতা, মৈত্রীময় স্নিগ্ধ ছোঁয়ায় আসুক শুভ্রতা’।
আজ মঙ্গলবার সকালে পাঁচদিনব্যাপী এ উৎসবের উদ্বোধনী র্যালিটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। মারমা, চাকমা, ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যা, ম্রো, চাক, খেয়াং, খুমী, বম, লুসাই, পাঙ্খোয়া সম্প্রদায়ের তরুণ-তরুণী এবং শিশু-কিশোররা নিজস্ব সাঁজ সজ্জা ও পোশাকে ব্যানার ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড নিয়ে র্যালিতে অংশ নেয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপি।
র্যালি শেষে রাজার মাঠে বয়স্ক পূজা, শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা এবং আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় অন্যদের মধ্যে বান্দরবান ৬৯ সেনা রিজিয়নের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফখরুল আহসান, জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক, জেলা পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান, বান্দরবান ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটের পরিচালক মংনুচিং মারমাসহ স্থানীয় পাহাড়ি সম্প্রদায়ের সর্বস্তরের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বীর বাহাদুর এমপি বলেন, ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে অতীতের সব ভুলভ্রান্তি, গ্লানি মুছে দিয়ে পার্বত্যাঞ্চলকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাব। পাহাড়ের সব ধর্ম-সম্প্রদায়ের মানুষ একে অপরের প্রতি আস্থা রেখে ঐক্যবদ্ধভাবে পার্বত্যাঞ্চলকে আরো সুন্দর-সুখী-সমৃদ্ধ গড়ে তুলতে কাজ করব।’
সাংগ্রাই আয়োজক কমিটির সাধারণ সম্পাদক কোকো ওয়াই মারমা জানান, আগামীকাল বুধবার সাংগ্রাই উৎসবের দ্বিতীয় দিন দুপুর আড়াইটায় উজানী পাড়ের সাঙ্গু নদী চরে পবিত্র বৌদ্ধমূর্তি স্নান অনুষ্ঠিত হবে। রাজগুরু কিয়াং হতে সারিবদ্ধভাবে বৌদ্ধধর্মীয় গুরুরা (ভান্তেরা) কষ্টিপাথর এবং স্বর্ণের বৌদ্ধমূর্তি সহকারে পায়ে হেঁটে নদীর চরে গিয়ে সমবেত হবেন। সেখানে সম্মিলিত প্রার্থনায় বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ এবং তরুণ-তরুণী, শিশু-কিশোররা অংশ নেবে।
পরদিন বৃহস্পতিবার ১৪ এপ্রিল রাজগুরু ক্যায়াংএ হাজারো প্রদীপ প্রজ্বালন, উজানীপাড়া, মধ্যমপাড়া, জাদীপাড়াসহ বিভিন্ন পাহাড়ি পল্লীগুলোতে তরুণ-তরুণীদের পিঠা তৈরির প্রতিযোগিতা চলবে। রাতব্যাপী সারিবদ্ধভাবে বসে তরুণ-তরুণীরা হরেক রকমের পিঠা তৈরি করে পাড়া-প্রতিবেশীদের ঘরে ঘরে বিতরণ করবেন। এ ছাড়া আগামী ১৫-১৬ এপ্রিল রাজার মাঠে দুদিনব্যাপী জলকেলি বা মৈত্রী পানিবর্ষণ অনুষ্ঠিত হবে।
ওই দুদিন সন্ধ্যায় রাজার মাঠে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। মারমা শিল্পীগোষ্ঠীসহ জেলার বিভিন্ন স্থানের স্থানীয় শিল্পীগোষ্ঠীগুলো নাচ-গান পরিবেশন করবে।