পারিবারিক বিরোধে শিশু চাচাত বোনকে হত্যা!
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2016/05/17/photo-1463499041.jpg)
গাজীপুরে শিশু স্কুলছাত্রীকে হত্যা করে টয়লেটের সেপটিক ট্যাংকে ডুবিয়ে রাখার ঘটনায় প্রধান আসামি নিহতের চাচাত ভাই রহমত উল্লাহ মনাকে (১৮) পুলিশ আজ মঙ্গলবার দুপুরে গ্রেপ্তার করেছে।
গ্রেপ্তারের পর রহমত উল্লাহ মনা বিকেলে গাজীপুরের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম ইলিয়াস রহমানের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
গাজীপুর আদালতের পুলিশ পরিদর্শক রবিউল হোসেন ও জয়দেবপুর থানার পূবাইল পুলিশ ক্যাম্পের উপপরিদর্শক (এসআই) মোবারক হোসেন জানান, দুপুরে রাজধানী মিরপুরের রূপগঞ্জ হাউজিং সোসাইটি এলাকায় অভিযান চালিয়ে ভগ্নিপতি হোসেনের ভাড়া বাসা থেকে মনাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বিকেলে মনা চাচাত বোন সাদিয়া আফরিন ওরফে মায়াকে (৮) হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন। মনা জানান, জমিজমা নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে তাঁর বাবা কালামের সঙ্গে চাচা কামালের বিরোধ চলে আসছিল। এই নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে ঝগড়া বিবাদ লেগে থাকত।
ফলে দুই পরিবারের সদস্যদের মধ্যে কথাবার্তা বন্ধ ছিল। ঘটনার দিন রোববার দুপুরে মনা দাদির জন্য খাওয়ার পানি আনতে বলেন শিশু মায়াকে। মায়া পানি আনতে অপারগতা প্রকাশ করে। এতে মনা ক্ষিপ্ত হয়ে থাপড় মারলে মায়া তাকে গালি দেয়। মনা এ সময় গলা চেপে ধরলে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মায়া মারা যায়। পরে লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে তিনি নিহত মালার গলায় রশি বেঁধে বাড়ির টয়লেটের সেপটিক ট্যাংকের ভেতরে ফেলে দেয়। কিন্তু লাশ ভেসে থাকায় বাঁশের লাঠি দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে তা চুবিয়ে ঢাকনা দিয়ে সেপটিক ট্যাংক ঢেকে রাখেন। পরে বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে রাজধানীর মিরপুরের রূপগঞ্জ হাউজিং সোসাইটি এলাকায় তাঁর বোনের বাসায় আশ্রয় নেন।
এদিকে দুপুরে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ মনাকে গাজীপুরের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম ইলিয়াস রহমানের আদালতে হাজির করে। আদালতের বিচারক তাঁর খাস কামরায় ১৬৪ ধারায় রহমত উল্লাহ মনার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গ্রহণ করে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন।
নিহত সাদিয়া আফরিন ওরফে মায়া গাজীপুর সিটি করপোরেশনের হায়দরাবাদের দখিনখান এলাকার রাজমিস্ত্রি কামাল হোসেনের মেয়ে। সে স্থানীয় হায়দরাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ত।
মায়া গত রোববার দুপুরে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়। স্বজন ও এলাকাবাসী দিনভর খোঁজাখুঁজি ও মাইকিং করেও শিশুটির সন্ধান পায়নি। পরে রাত ১১টার দিকে এলাকাবাসী কামালের বড় ভাই আবুল কালামের টয়লেটের সেপটিক ট্যাংকে গলায় রশি দিয়ে পেঁচানো মায়ার লাশ দেখতে পায়। খবর পেয়ে পুলিশ মায়ার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়।
এ ব্যাপারে নিহতের বাবা বাদী হয়ে সোমবার জয়দেবপুর থানায় মামলা করেন। মামলায় রহমত উল্লাহ ওরফে মনা, তাঁর মা ফজিলত বেগম ওরফে ফাতেমা (৪০) ও বোন নাসিমা আক্তারকে (২২) আসামি করা হয়েছে। পুলিশ মনার মা ও বোনকে সোমবার গ্রেপ্তার করে।